.
আমি রাগে ফুসতে ফুসতে রুমে চলে এলাম। রিমির উপর রাগ উপচে পড়ছে। আমি রিমির ভালোর জন্য এতকিছু করলাম অথচ সে আমাকেই দোষী বানালো। এজন্যই মানুষ বলে, কারো ভালো করতে নেই।
আমি এসব ভেবে বিছানার দিকে তাকাতেই চমকে উঠলাম। দেখি, তরী বিছানার উপর বসে পা দোলাচ্ছে। আমি সকাল সকাল তরীকে আমাদের বাড়ি দেখে বেশ অবাক হলাম। রিমির কাছে এগিয়ে গিয়ে বললাম,
.
-- কি ব্যাপার তরী, তুমি এত সকালে আমাদের
বাড়ি এসেছো যে.? (আমি)
.
-- কেন আমি আসাতে কোন সমস্যা হয়েছে.? (তরী)
.
-- আরে সমস্যা হবে কেন.? না জানিয়ে চলে এসেছো
তাই জিজ্ঞেস করলাম। (আমি)
.
-- তোমার চাঁদ মুখখানা দেখতে এসেছি। আমার ফোন
ধরো না কেন.?
কাল রাত থেকে কম করে হলেও হাজার বার
ফোন দিয়েছি। (তরী)
.
-- ফোন সাইলেন্ট ছিল, বুঝতে পারে নি তুমি ফোন দিয়েছিলে। (গম্ভীর গলায়)
.
-- তোমার কি কোন কারণে মন খারাপ.? (তরী)
.
-- মন খারাপ থাকবে কেন.? আমি বিন্দাস আছি। (আমি)
.
-- তাহলে মুখটা এমন শুকনো লাগছে কেন.? (তরী)
.
-- এমনি। (আমি)
.
-- তোমার কি বিয়েতে মত নেই.? (তরী)
.
-- এটা কেমন কথা, তরী.? বিয়েতে মত থাকবে না কেন.? পাগলের মত কি সব বলে যাচ্ছো। (বিরক্ত হয়ে)
.
-- তাহলে তোমাকে এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন.?
আর মাত্র পাঁচ দিন পর আমাদের বিয়ে অথচ তোমার
মাঝে কোন এক্সসাইটমেন্ট নেই।
মুখটা বাংলার পাঁচের মত বানিয়ে রেখেছো। (তরী)
.
-- তাহলে কি করতে বলছো, ধৈ ধৈ করে নাচবো.?
চলো তাহলে নাচি.! (রেগে)
.
-- রেগে যাচ্ছো কেন.? আমি কি নাচার কথা
বলেছি একবারও.?
তোমার মন খারাপ তাই জানতে চেয়েছি কি
হয়েছে। (তরী)
.
-- আমার কিছুই হয় নি, আমি একদম ঠিক আছি।
তুমি এসব ফাউল প্যাচাল বাদ দিয়ে বলো কি জন্য এসেছো। (আমি)
.
-- বিয়ের কেনাকাটা করতে যাবো। মা-বাবা অনেক
আগেই চলে গেছে।
তোমাদের তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে। (তরী)
.
-- আমি যাবো না। (আমি)
.
-- কেন.? (ভ্রু-কুঁচকে)
.
-- আমার ভাল লাগছে না। তোমরা সবাই যাও। (আমি)
.
-- তুমি বর আর তুমি যাবে না.? (দাঁত কিড়মিড় করে)
.
-- আরে, আমার ভাল লাগছে না। তাছাড়া আমি গিয়ে
কি করবো.?
তুমি তোমার পছন্দ মত যা পারো কিনে নিও। (আমি)
.
-- উহু, কোন কথা হবে না। তোমাকে যেতেই হবে।
সবার সাথে মন এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে।
এখন তাড়াতাড়ি রেডি হও, হাতে বেশি সময় নেই।
অনেক কেনাকাটা করতে হবে। (তরী)
.
আমি তরীর জোরাজুরিতে যেতে রাজি হলাম।
এমনিতেই রিমির সাথে ঝগড়া করে মন খারাপ তার
উপর এখন শপিং এর মত উটকো ঝামেলা।
আমি রেডি হয়ে তরীকে নিয়ে ড্রইংরুমে এলাম।
তারপর সবাই বিয়ের কেনাকাটা করতে বের হলাম।
মা-বাবা একটা গাড়ি নিয়ে চলে গেল আর আমি, তরী, রিমি, শোভন আরেকটা গাড়ি নিয়ে রওনা দিলাম।
.
আমি গাড়ি ড্রাইভ করছি, তরী আমার পাশে বসে আছে। পিছনের সিটে রিমি আর শোভন বসেছে।
আমার শোভনকে দেখে শরীর শুধু কিলবিল করছে। আমার বিয়েতে ঐ হারামিটার কি কাজ শুনি.? শালা নাচতে নাচতে চলে এসেছে। আমার হাতের মাইর খেয়েও শিক্ষা হয় নি ব্যাটার.! আবার রিমির সাথে জোকের মত লেগে আছে। হারামির বাচ্চা.!
.
আমি বিরবির করে এসব বলে যাচ্ছি আর ড্রাইভ করছি। মাঝে মাঝে লুকিং গ্লাসে রিমি আর শোভনকে দেখছি। হটাৎ রিমি একটা ভয়ানক কান্ড ঘটিয়ে ফেলল। যা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
রিমি আচমকা শোভনের গালে কিস করে বসে.!
.
.
.
আমি বিরবির করে শোভনকে গালি দিচ্ছি আর ড্রাইভ করছি। মাঝে মাঝে লুকিং গ্লাসে রিমি আর শোভনকে দেখছি। হটাৎ রিমি একটা ভয়ানক কান্ড ঘটিয়ে ফেলল।
যা দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।
রিমি আচমকা শোভনের গালে কিস করে বসে।
.
আমি চমকে উঠি। সাথে সাথে গাড়ি ব্রেক করি।
তরী বিরক্ত হয়ে বলে,
.
-- কি ব্যাপার, গাড়ি থামালে কেন.? (তরী)
.
আমি তরীর কথা কান না দিয়ে পিছনে তাকালাম। রিমি আর শোভন একে অপরের সাথে লেপ্টে আছে। আমি রাগে চোখ লাল করে বললাম,
.
-- গাড়ির মর্ধ্যে এসব কি করছিস, হ্যাঁ.? তোরা কি পার্কে বসে আছিস নাকি যে এসব আউল ফাউল কাজ করবি। (আমি)
.
-- তাতে তোর কি.? তোর কোন সমস্যা হচ্ছে.? (রিমি)
.
কড়া গলায় বলল রিমি। এতে আমার রাগ আরো বেড়ে গেল। আমি এক প্রকার চিৎকার করে বললাম,
.
-- অবশ্যই আছে। আমার সামনে এসব নষ্টামি
একদম করবি না বলে দিলাম। (আমি)
.
-- একশো বার করবো। কি করবি তুই.? (চোখ পাকিয়ে)
.
-- কি করবো দেখতে চাস.? দাঁড়া, দেখাচ্ছি কি করবো। (আমি)
.
আমি উত্তেজিত হয়ে গাড়ি থেকে নামতে যাবো তখন
তরী আমাকে বাঁধা দিলো।
চোখের ইশারায় আমাকে শান্ত হতে বলল। আমি জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করলাম।
রাস্তার মাঝে সিনক্রিয়েট করা যাবে না। পিছন থেকে
রিমি আবার বলল,
.
-- বেশি বকবক না করে নিজের চরকায় তেল দে।
আমি কি করবো সেটা আমার ব্যাক্তিগত বিষয়। (রিমি)
.
-- আবার কথা বলিস.? মেরে ফেলবো একদম.! (আমি)
.
আমি রাগে সমানে ফুফাচ্ছি। রিমিকে আরো কিছু বলতে যাবো এমন সময় তরী আমাকে বাঁধা দিয়ে বলল,
.
-- আহ, শাহিন বাদ দাও না এসব। কিছুদিন পর ওরা
বিয়ে করবে, যা ইচ্ছা করুক।
তুমি ওদের মাঝে নাক গলাচ্ছো কেন.? (তরী)
.
তরীর কথা শুনে মনে মনে বললাম, 'আমি কেন নাক গলাচ্ছি সেটা তুমি বুঝবে না। আমার বুকের মাঝে ঝড় বইছে.! যেদিন থেকে শোভন রিমির জীবনে এসেছে সেদিন থেকে আমি ঘুমাতে পারছি না। রিমিকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখি। সবসময় মনে হয় আমার জীবন থেকে মূল্যবান কিছু হারিয়ে যাবে। কিন্তু সেটা কি বুঝতে পারছি না।
আজকাল আমার বড্ড ভয় করে। হার্টবিট সবসময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। হুট করে আমার সাথে এসব কেন হচ্ছে বুঝতে পারছি না।'
.
আমি মনে মনে এসব বলে গাড়ি স্টার্ট দিলাম।
রিমিকে আর কিছু বললাম না। তবে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, শোভনকে আচ্ছামত টাইট দিবো। শালাকে একবার খালি হাতের কাছে পাই। মেরে বাপের নাম ভুলিয়ে দিবো। শালা লুচ্চা কোথাকার.!
.
প্রায় ২০ মিনিট ড্রাইভ করার পর শপিং মলে এসে পৌছালাম। আসার পথে রিমি আর শোভন অনেক কিছু করেছে। কখনো একে-অপরের গালে চুমু খেয়েছে, কখনো আবার গাল ধরে টানাটানি করেছে, আবার কখনো গা'য়ে পরে ঢলাঢলি করেছে।
বিশেষ করে শোভন এসব বেশি করেছে। আমার তো রাগে খালি শরীর কিলবিল করছিল। ইচ্ছে করছিল, পাড়া দিয়ে শোভনের পেটের ভুটি বের করে দেই। আমি যে কিভাবে রাগ কন্ট্রোল করেছি সেটা শুধু আমি জানি।
.
গাড়ি পার্ক করে সবাই শপিংমলে ঢুকলাম। সবাই শপিং নিয়ে ব্যস্ত কিন্তু আমার দৃষ্টি শুধু রিমি আর শোভনের উপর। তারা দু'জন কি করছে সেটাই দেখছি।
রিমি শোভনকে পাঞ্জাবি পছন্দ করে দিচ্ছে আবার শোভন রিমিকে শাড়ি পছন্দ করে দিচ্ছে। রিমি শাড়ি নিয়ে 'ওয়াও ওয়াও' বলে শোভনকে আলতো করে জড়িয়ে ধরছে। রিমির এসব ঢং দেখে রাগে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে। এরা শপিং করতে এসেছে নাকি মানুষদের দেখিয়ে দেখিয়ে রোমান্স করতে এসেছে আল্লাহ মালুম।
একটুপর তরী একটা কালো রঙের পাঞ্জাবি হাতে
ধরিয়ে বলল,
.
-- শাহিন, দেখো তো এই পাঞ্জাবিটা কেমন.? (তরী)
.
-- ভালোই তো। (অন্যদিকে তাকিয়ে)
.
-- আরে, ভালো করে দেখো না। (তরী)
.
-- দেখলাম তো। তোমার পছন্দ মতো কিনে নাও।
আমাকে না দেখালেও চলবে। (আমি)
.
-- এটা কেমন কথা.? তোমার নিজের কোন
পছন্দ নেই.? (তরী)
.
-- এখানে পছন্দ-অপছন্দের কি আছে। তুমি কি আমার জন্য খারাপ জিনিস পছন্দ করবে নাকি.?
যে কোন একটা নিলেই হলো। (আমি)
.
-- তবুও... তোমার... ??? (তরী)
.
-- থামবে তুমি.! কেন এক কথা বারবার বলে
বিরক্ত করছো।
আমি তো বললাম, যা ইচ্ছা কিনে নাও তারপরও
কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করছো কেন.? (রেগে)
.
-- আজব তো.! আমি আবার কি করলাম.? (তরী)
.
-- চুপ করো তো। আমি গেলাম, আমার ভালো
লাগছে না। (আমি)
.
আমি বিরক্ত হয়ে শপিং মল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে
এসে বসলাম। কিছুই ভালো লাগছে না। বুকের মর্ধ্যে শুধু হাসফাস করছে।
কিছুক্ষণ পর তরী আমার কাছে এলো। গাড়ির দরজা
খুলে আমার পাশে বসলো।
আমি এবার আরো বিরক্ত হলাম।
.
-- এখানে কি.? শপিং করা শেষ.? (আমি)
.
-- না। (মুখ গোমড়া করে)
.
-- তাহলে এখানে কি করছো.? যাও শপিং করো। (বিরক্ত হয়ে)
.
-- সত্যি করে বলো তো, তোমার কি হয়েছে।
তুমি আমার সাথে এমন করছো কেন.? (তরী)
.
-- জানি না। আমাকে একটু একা থাকতে দাও। (আমি)
.
-- থাকো তুমি... একা একা এখানে মরো.!
কি দেখে যে তোমাকে বিয়ে করতে রাজি হলাম
আল্লাহ জানে। পোড়া কপাল আমার.!
তুমি আমার সাথে আর কথা বলবে না। (তরী)
.
উচ্চ স্বরে কথাগুলো বলে তরী চলে গেল। আমি হাফ
ছেড়ে বাঁচলাম। আজকাল তরীকে বড্ড বিরক্ত লাগছে। অথচ কয়েকদিন আগেই তরীর জন্য আমি পাগল ছিলাম। আচ্ছা আমি সত্যি-ই তরীকে ভালবাসি নাকি সে
আমার মোহ.? এসব হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
.
.
.
দেখতে দেখতে ৩ দিন কেটে গেল। কাল আমার গা'য়ে হলুদ। পরশু বিয়ে.! কিন্তু সেসব নিয়ে আমার মাঝে কোন ভাবান্তর নেই। আমি রিমির ভাবনায় মগ্ন.!
এই ৩ দিনের ১টি রাত ও আমি ঘুমাতে পারি নি। সবসময় মাথার মর্ধ্যে শুধু রিমির চিন্তা ঘুরপাক খায়।
.
চিন্তা হয়, শোভন রিমির কোন ক্ষতি না করে বসে। রিমি এমনি রাগচটা হলেও খুব ভোলাভালা। শোভন ওকে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করে খারাপ কাজে রাজি করিয়ে ফেললে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আমি সেটা কিছুতেই চাই না।
মাথায় এসব চিন্তা এলে আমার ঘুম হয় না। আর না ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে শরীরের অবস্থা নাজেহাল। চোখ ভিতরে ঢুকে গেছে।
.
এই ৩ দিন রিমির সাথে আমার কোন কথা হয় নি। দেখাও হয় নি সেভাবে। রিমি সবসময় শোভনকে নিয়ে ব্যস্ত। আর শোভন শালাও বদের হাড্ডি। খালি রিমির পিছে ঘুরঘুর করে। শালাকে একবার হাতের কাছে পেলে বুঝিয়ে দিতাম আমি কি জিনিস.!
.
রাতে শুয়ে থেকে রিমির কথা ভাবছি। তরী লাগাতার ফোন দিয়ে যাচ্ছে। আমি বিরক্ত হয়ে ফোন বন্ধ করে দিলাম।
বাড়িতে তেমন কেউ নেই। শুধু আমি আর রিমি। মা-বাবা বিয়ের দাওয়াত দিতে গ্রামের বাড়ি গেছে। কাল সকালে ফিরবে।
.
হটাৎ কে যেন দরজায় নক করলো। এত রাতে আবার কে.? আমি দরজা খুলে দেখি বাইরে রিমি। আমাকে দেখে রিমি মিষ্টি গলায় বলল,
-- ঘুমিয়ে পরেছিলি.? (রিমি)
.
-- না, জেগেই ছিলাম। কিছু বলবি.? (আমি)
.
-- হুমম। আসলে, সেদিন ওমন ব্যবহারের জন্য স্যরি.! প্লিজ, কিছু মনে করিস না। (রিমি)
.
-- সমস্যা নেই, আমি কিছু মনে করি নি। (আমি)
.
-- যাক বাবা বাঁচলাম। ভেবেছিলাম সেদিনের জন্য
রেগে থাকবি। (রিমি)
.
তারপর রিমি আমার রুমে ঢুকলো। বিছানার উপর গিয়ে বসলো। আমি রিমির সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। রিমি এদিক-সেদিক তাকিয়ে হাত কচলাচ্ছে। রিমি হয়তো আমাকে কিছু বলতে চাইছে কিন্তু সংকোচের জন্য বলতে পারছে না। নিরবতা ভেঙে আমি-ই বললাম,
.
-- আর কিছু বলবি.? (আমি)
.
-- হুমম। আজকের রাতটা আমাকে তোর কাছে
থাকতে দিবি.? (রিমি)
.
-- What.? কি বললি.? (চমকে উঠে)
.
-- না... মানে... আসলে... আজকের রাতটা আমি
তোর কাছে থাকবো। (রিমি)
.
-- পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি.? কি যা-তা বলছিস, হ্যাঁ.! (রেগে)
.
-- প্লিজ, রাগ করিস না। আসলে আমার একা একা
ঘুমাতে খুব ভয় করছে তাই তোর কাছে থাকতে চাইছি। (রিমি)
.
-- মানে কি.? এতদিন তো একাই থাকতি, তাহলে
আজকে আবার একা ঘুমাতে ভয় করছে কেন.? (আমি)
.
-- আসলে গতকাল রাতে একটা হরর মুভি দেখেছিলাম। তাই আজকে একা ঘুমাতে খুব ভয় করছে। তাছাড়া বাড়িতে কোন লোকজন ও নেই। আমার কেমন জানি লাগছে। তোর সাথে ঘুমালে আর ভয় পাবো না। (করুণ স্বরে)
.
-- সে যাই হোক, বিবাহ উপযুক্ত কোন ছেলেমেয়ের
এক ঘরে থাকা ঠিক না। (আমি)
.
-- তাতে কি হয়েছে.? আমরা তো ভাই-বোন.! (রিমি)
.
-- নিজের তো আর না। তাই না থাকাই ভালো। (আমি)
.
-- কেন আমাকে নিয়ে তোর কি কোনো খারাপ উদ্দেশ্য আছে নাকি যে আমার সাথে থাকতে ভয় পাচ্ছিস.? (রিমি)
.
-- তা থাকবে কেন... আমি তো আর শোভনের মত না যে তোর সাথে খারাপ কিছু করবো। (আমি)
.
-- তাহলে আমাকে থাকতে দে। (রিমি)
.
-- ঠিক আছে, থাক। (আমি)
.
রিমি আর কিছু না বলে বিছানায় শুয়ে পরলো। আমি সোফাতে শুতে যাবো তখন রিমি বলল,
.
-- কি ব্যাপার, তুই সোফায় ঘুমাবি.? (রিমি)
.
-- হুমম। (আমি)
.
-- আমার সাথে বিছানায় এসে ঘুমা। (রিমি)
.
-- না থাক, আমি এখানেই ঘুমাতে পারবো। (আমি)
.
-- প্লিজ, আয়... আমার খুব ভয় করছে। (রিমি)
.
-- আজব তো.! ছোট বাচ্চার মত এত ভয়
পাচ্ছিস কেন.? (আমি)
.
-- তুই বুঝবি না। তোকে আমার সাথে ঘুমাতে বলেছি ঘুমা। অসুবিধা হলে মাঝখানে বালিশ রাখ, তবু্ও ঘুমা। খামোখা কষ্ট করে সোফায় ঘুমানোর কি দরকার। (রিমি)
.
রিমির কথা আমার পছন্দ হলো। এমনিতেই ৩ দিন ধরে রিমির চিন্তায় ঘুমাতে পারি না। তার উপর এখন সোফায় শুলে আরো ঘুম হবে না। তারচেয়ে বরং বিছানায় গিয়ে ঘুমাই। আর মাঝখানে বালিশ তো থাকবেই, সমস্যা কি.?
.
আমি মাঝখানে বালিশ রেখে শুয়ে পরলাম। জানি না কেন, রিমির পাশে শুয়ে খুব শান্তি লাগছে। আমি আড় চোখে রিমির দিকে তাকালাম। রিমি উল্টোদিকে মুখ করে শুয়ে আছে। আমি আর কিছু বললাম না। চোখ বন্ধ করতেই ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম।
.
সকাল বেলা ঘুম ভাঙতেই নিজেকে রিমির উপর আবিষ্কার করলাম। আমি রিমির বুকের উপর শুয়ে আছি.!
.
চলবে.... ?????