.
.
আমার কথা শুনে রিমি আমার কাছে
তেড়ে আসলো।
শার্টের কলার ধরে ধমক দিয়ে বলল,
.
-- কুত্তা, টাকা দিবি না মানে কি.? (রিমি)
.
-- টাকা দিবো না মানে দিবো না। (আমি)
.
-- তুই দিবি না, তোর বাপ দিবে.! (রিমি)
.
-- ঠিক আছে আমার বাবার কাছ
থেকে নিয়ে নিস। (আমি)
.
-- আমি শ্বশুড় আব্বার কাছে থেকে টাকা নিতে
পারবো না। (রিমি)
.
রিমি কথাটা বলেই জিহ্বায় কামড় দিলো।
আমি রাগী লুক নিয়ে রিমির দিকে তাকালাম।
বললাম,
.ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
-- তুই আমার বাবাকে শ্বশুড় আব্বা বললি কেন.?
মাইর কিন্তু একটাও মাটিকে পরবে না, রিমি.! (আমি)
.
আমার কথা শুনে রিমি একটু ঘাবড়ে গেল।
শার্টের কলার ছেড়ে দিয়ে একটু দূরে সরে বসলো।
আমতা আমতা করে বলল,
.
-- হিহি, ওটা তো মজা করে বললাম।
তুই আমার কাজের টাকা দিয়ে দে আমি
চলে যাবো। (রিমি)
.
-- টাকা নাই। (আমি)
.
-- আছে। (রিমি)
.
-- বললাম তো নাই। টাকা কোথায়
পাবো আমি.? (আমি)
.
-- অতকিছু বুঝি না আমার টাকা লাগবে। (রিমি)
.
-- আজব তো.! টাকা না থাকলে দিবো কিভাবে.?
চুরি করে এনে দিব নাকি.? (আমি)
.
-- দরকার পড়লে দিবি। (রিমি)
.
-- দিব একটা চড়.! যা এখান থেকে। (রেগে)
.
-- যাব মানে, টাকা দিবি না তুই.? (রিমি)
.
-- না। (আমি)
.
-- দিবি না তো.? (রিমি)
.
-- বললাম তো না। (আমি)
.
-- আবারো বলছি টাকা দিবি নাকি না.? (রিমি)
.
-- দিবো না, দিবো না, দিবো না। (আমি)
.
-- শেষবারের মত বলছি টাকা দে।
না হলে আমি অন্য ব্যবস্থা নিবো কিন্তু.! (রিমি)
.
-- তুই কি করবি কর আমি এক টাকাও
দিব না। (আমি)
.
-- ওকে, দেখাচ্ছি মজা। আমাকে তুই চিনিস না.!
সকাল থেকে তোর এতগুলো কাজ করে দিলাম
আর তুই সামান্য ক'টা টাকা দিতে পারবি না.? (রিমি)
.
-- না। তাছাড়া আমি তোকে আমার কাজ
করে দিতে বলি নি। তুই করলি কেন.? (আমি)
.
-- বুঝেছি, এভাবে তোর সাথে পারা যাবে না।
তোকে টাইট দিতে অন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। (রিমি)
.
আমি শয়তানি হাসি দিয়ে
বললাম,
.
-- তোর যা ইচ্ছা কর, আমার থেকে
একটা কানা কড়িও বের করতে পারবি না। (আমি)
.
-- ঠিক আছে, দেখাচ্ছি পারি কি-না। (রিমি)
.ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
-- ওকে। চেষ্টা করে দেখ। (আমি)
.
রিমি কিছু না বলেই চলে গেল। আমি খুশিতে
আত্মহারা হয়ে বিছানার উপর গড়াগড়ি খেতে
লাগলাম।
পেত্নীটাকে আজ আচ্ছামত টাইট দিছি।
আমার থেকে টাকা দিবে রে.?
এই শাহিনের কাছ থেকে টাকা বের
অত সহজ না।
.
খুব ক্লান্ত লাগছে তাই ভাবলাম একটু ঘুমিয়ে নিই।
খেতেও ইচ্ছা করছে না। ক্রিকেট খেলার বাজির
টাকা দিয়ে বিন্দাস পার্টি করেছি.!
আমি শুয়ে এপাশ-ওপাশ করছি তখন দেখলাম, রিমি
আবার আসলো।
আমি শোয়া থেকে উঠে বসলাম। রিমিকে চোখ
টিপ মেরে বললাম,
.
-- টাকা নিতে এসেছো, সোনামনি.?
তা কতা টাকা লাগবে তোমার.?
৫ টাকা নাকি ১০ টাকা.? (আমি)
.
ভেবেছিলাম রিমি রেগে যাবে কিন্তু তা না করে
উল্টো হাসা শুরু করে দিল।
আমি অবাক হয়ে বললাম,
.ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
-- এভাবে হাসছিস কেন.? (আমি)
.
রিমি কোনমত হাসি থামিয়ে বলল,
.
-- কিছুক্ষণ পর তোর অবস্থাটা কেমন
হবে সেটা ভেবে হাসছি। (রিমি)
.
-- মানে.? তোর কথা ঠিক বুঝলাম না। (আমি)
.
-- দাঁড়া, বোঝাচ্ছি। (রিমি)
.
কথাটা বলে রিমি আমার পাশে বসলো।
রিমির ফোনটা আমার দিকে বাড়িয়ে
দিয়ে বলল,
.
-- দেখতো চিনতে পারিস কি-না.? (রিমি)
.
আমি রিমির ফোনটা হাতে নিলাম। ফোনের স্কিনের
দিকে তাকাতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেল।
একদম হা হয়ে গেলাম। নিজের চোখকে যেন
বিশ্বাস হচ্ছে না। আমি ঠিক দেখছি তো.?
আমি এক পলকে ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ভ্রু-কুচকে মনে সংশয়
নিয়ে রিমির দিকে তাকালাম।
গম্ভীর গলায় বললাম,
.
-- এসব কি, রিমি.? (আমি)
.
রিমি মুচকি হেসে বলল,
.
-- কেন, তোর ছবি.! ভালো হয় নি.? (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে আমি আবার ফোনের স্ক্রিনের
দিকে তাকালাম।
ফোনের স্ক্রিনে আমার ছবিটা সুন্দর ভাবে ভাসছে।
ছবিটা আমি যখন বাথরুমে গোসল করছিলাম
তখনকার তোলা।
আমার গা'য়ে সেসময় কিচ্ছু ছিল না শুধু
আন্ডারওয়্যার ছাড়া।
জানি না, পেত্নীটা এই ছবিটা তুললো কিভাবে.!
আমার তো মাথায় কিচ্ছু ঢুকছে না।
.
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে রিমির
দিকে তাকালাম।
রিমির চোখে-মুখে দুষ্টু হাসির ঝিলিক।
হাবভাব দেখে বেশ বুঝাতে পারছি পেন্তীটা মনে মনে
কিছু একটা করার প্ল্যান করছে।
.ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
সত্যি বলতে, রিমির উপর খুব রাগ উঠল।
এমন বেয়াদবির কোনো মানে হয়.?
রিমি কোন হিসেবে আমার এই ছবিগুলো তুলল.?
লজ্জা-সরম বলতে মেয়েটার কিছু নেই নাকি.?
আমি রিমিকে ধমক দিয়ে, রাগী গলায় বললাম,
.
-- তুই এসব ছবি কেন তুললি, রিমি.?
এমন বেয়াদবির মানে কি.?
তোর লজ্জা করলো না এসব করতে.? (আমি)
.
রিমি মুচকি হেসে উত্তর দিল,
.
-- না তো। কিসের লজ্জা, আমি তো
প্রতিশোধ নিলাম। (রিমি)
.
-- প্রতিশোধ.? (অবাক হয়ে)
.
-- হুমম, প্রতিশোধ.! (রিমি)
.
আমি মাত্রাতিরিক্ত অবাক হয়ে রিমিকে বললাম,
.
-- আরে, কিসের প্রতিশোধ.? (আমি)
.
-- বাহ্ রে একটু আগে আমি যখন বাথরুমে
গোসল করছিলাম তুই আচমকা বাথরুমে ঢুকে
আমার সব দেখে ফেললি না.? (রিমি)
.
-- হ্যা কিন্তু সেটা তো একটা দূর্ঘটনা ছিল। (আমি)
.
-- দূর্ঘটনা হোক বা অন্যকিছু, দেখছিস তো।
তাই তুইও যখন গোসল করছিলি আমি তখন
বাথরুমের দরজা ফাক করে তোর সব দেখেছি আর
কয়েকটা ছবি তুলেছি তোকে দেখানোর জন্য।
এখন হিসেব বরাবর। তুইও আমার সব দেখেছিস
আমিও তোর সব দেখেছি। শোধবোধ। (রিমি)
.
রিমির এসব কথা শুনে রাগে আমার শরীর থরথর
করে কাঁপতে লাগল। কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।
ইচ্ছে করছে পেত্নীটার গালে পাঁচ আঙুলের ছাপ
বসিয়ে দেই। কিন্তু সেটাও করতে পারছি না।
রিমিকে মারলে আমার-ই বেশি কষ্ট হবে।
এখন রাগে নিজের মাথার চুল নিজেই ছিঁড়তে
ইচ্ছা করছে।
.
এদিকে,
আমার চুপ করে থাকা দেখে রিমি আমাকে
ধাক্কা দিয়ে টিপ্পানি কেটে বলল,
.
-- কি জনাব, চুপ করে আছেন কেন.?
কেমন দিলাম আপনাকে.? (রিমি)
.
রিমির এমন খোঁচা মারা কথা আমার মোটেও
সহ্য হচ্ছে না। কিন্তু তবুও রিমিকে কিছু বললাম না।
অনেক কষ্টে রাগটাকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছি।
.
কিছু সময় পর রিমি আবার বলে উঠলো,
.
-- আমার টাকাটা দিবি না.? তাড়াতাড়ি দে, আমার
কাজ আছে। (রিমি)
.
এবার আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না।
আমি বসা থেকে উঠে চিৎকার করে বললাম,
.
-- এতবড় একটা কান্ড ঘটানোর পর তুই কোন
মুখে আমার কাছে টাকা চাইস.?
টাকা তো দূরের কথা, ৫ পয়সাও দিবো না তোকে।
এখন বেশি কথা না বলে এখান থেকে যা।
না হলে ভুলে যাবো তুই আমার বোন আর চড়িয়ে গাল ফুলিয়ে দিবো.! (রেগে)
.
আমার কথা শুনে রিমি মুখ বাঁকিয়ে বলল,
.
-- আর আমি বুঝি তোর পূজা করবো.?
আমিও মারতে জানি। চুপ করে আছি বলে ভাবিস
না কিছু করতে পারবো না। (রিমি)
.
আমি গম্ভীর গলায় বললাম,
.
-- কি করবি.? (আমি)
.
আমার কথা শুনে রিমি এবার দুষ্টু হাসি দিল।
বলল,
.
-- তোর এই সুন্দর সুন্দর ছবিগুলো
নেটে ছেড়ে দিব। (রিমি)
.
রিমির কথায় চমকে উঠলাম। আমার পুরো শরীর
রাগে শিউরে উঠলো। হার্টবিট বেড়ে গেল।
আমি চিৎকার দিয়ে বললাম,
.
-- কি বললি, এসব ছবি নেটে ছেড়ে
দিবি.? (আমি)
.
-- হুমম, সোনা.! ভালো হবে না.? (রিমি)
.
আমার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হল না।
নির্বাক হয়ে শুধু বসে রইলাম।
রিমি আবার বলে উঠলো,
.
-- কি হলো বাবু, চুপ করে বসে আছো কেন.?
তাড়াতাড়ি টাকা দাও.!
না হলে তোমার ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে যাবে।
তুমি রাতারাতি সেলিব্রেটি হয়ে যাবে, চান্দু.! (রিমি)
.
কথাগুলো বলে রিমি উচ্চস্বরে হাসতে লাগল।
আমার কপালে চিন্তার ভাজ পড়ে গেল
এই মেয়ের বিশ্বাস নেই, যদি সত্যি সত্যি
ছবিগুলো নেটে ছেড়ে ভাইরাল করে দেয় তাহলে
মানসম্মান বলে আর কিছু থাকবে না।
আমি অসহায় দৃষ্টিতে রিমির দিকে তাকালাম।
রিমির চোখে-মুখে শয়তানি হাসি।
.
আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। হটাৎ-ই হাতে
রাখা ফোনটার উপর চোখ পড়লো।
ফোনের স্ক্রিনে এখনও আমার ছবিটা জলজল
করে ভাসছে।
আমি দেরি না করে সাথে সাথে সব ক'টা ছবি
ডিলিট করে দিলাম। ব্যস কাজ হয়ে গেছে।
.
মুর্হূতেই নিজের মধ্যে বিজয়ী একটা ভাব চলে এল।
মনে হচ্ছে, আমি কোনো যুদ্ধে জয়ী হয়ে
বীরত্বের সাথে ফিরেছি।
আমি রিমির দিকে তাকিয়ে যুদ্ধজয়ের
হাসি দিয়ে বললাম,
.ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
-- খেল খতম.! সব ছবি ডিলিট।
এখন কি করবি.? তোর সব জারিজুরি শেষ.! (আমি)
.
আমার এমন কথা বা কর্মকান্ডে রিমির চেহেরায়
কোন পরিতর্বন দেখালাম না।
সে আগের মতই আমার দিকে চেয়ে আছে।
হটাৎ রিমি হো-হো করে হাসতে লাগলো।
আমি অবাক হলাম.! কপাল ভাজ হয়ে এল।
মেয়েটা পাগল হয়ে গেল নাকি.? এখানে হাসার
কি আছে.? হাসার মত তো কোন ঘটনা ঘটে
নি, তাহলে হাসছে কেন.?
.
রিমি উচ্চস্বরে কিছুক্ষণ হাসার পর তার হাসি
থামালো। তারপর বলল,
.
-- তোর কি আমাকে এতই বোকা
মনে হয়.? (রিমি)
.
-- মানে.? (মানে)
.
-- আরে এই ছবিগুলোর অনেকগুলো কপি
আমার কাছে আছে, তাই ডিলিট করে
কোন লাভ নেই।
খেল এখনও শেষ হয়নি বাবু, কেবল তো শুরু। (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে আমার হাসি মুখটা
চুপসে গেল।
নিজেকে খুব বোকাবোকা মনে হতে লাগলো।
এই ছবি যদি রিমি সত্যি সত্যি ভাইরাল করে তাহলে
আমি শেষ.! আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।
.
.
.
চলবে...... ?????