.
.
-- বাড়িতে আপনার আর আমার বিয়ের কথা চলছে।
আপনি এই বিষয়ে জানেন কিছু.? (তরী)
.
-- জানি বলেই তো আপনার সাথে দেখা
করতে এসেছি। (আমি)
.
-- ওহ। আমাকে আপনার পছন্দ হয়েছে.? (তরী)
.
তরীর কথার জবাবে কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না।
এদিকে, টেবিলের নিচে থেকে রিমি আমার পা'য়ে
সমানে সুড়সুড়ি দিয়ে যাচ্ছে।
আমি রিমিকে কিছু বলতেও পারছি না।
অন্যদিকে,
তরী তার প্রশ্নের জবাব পাওয়ার জন্য চাতক পাখির
মত আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
সবকিছু কেমন যেন অগোছালো লাগছে। কোন পরী
যদি বলে, 'আমাকে আপনার পছন্দ হয়েছে কি-না' তখন
সত্যি-ই কিছু বলার থাকে না। মূলত তরীর বলা কথাটা
আমার বলা উচিত ছিল কিন্তু ভুলক্রমে তরী বলে ফেলেছে।
আমি তরীর কথার জবাব না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলাম, ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
-- আমাকে আপনার পছন্দ হয়েছে.? (আমি)
.
-- জ্বী, আপনাকে আমার অনেক আগে থেকেই
পছন্দ। আমি আপনাকে ভালবা...... (তরী)
.
তরী কথাটা বলতে গিয়ে থেমে গেল।
আমি তাগাদা দিয়ে বললাম,
.
-- থামলেন কেন.? বলুন.... (আমি)
.
-- বাদ দিন। আমাকে আপনার পছন্দ হয়েছে
কি-না সেটা বলুন। (তরী)
.
-- অন্য একদিন বলবো। (আমি)
.
-- আজকেই বলুন। (তরী)
.
আমি পাশে বসা রিমির দিকে তাকালাম। পেন্তীটা আমার
দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে, আমাকে
কাচা চিবিয়ে খাবে। আমি নিশ্চিত, আমি যদি এখন
তরীকে বলি "তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে, বিয়ে করতে চাই.!" তাহলে রিমি এখানে হট্টগোল বাঁধিয়ে দিবে।
তখন আরেক ঝামেলা। আমি বুদ্ধি খাটিয়ে বললাম,
.
-- জায়গাটা সুবিধার না। আপনার সাথে কথা বলাতে
একজনের খুব জ্বলছে। পরে বলবো।
.
তরী সামান্য হাসলো। হয়তো বুঝতে পেরেছে, আমিও
তাকে পছন্দ করি। আমি রিমির দিকে তাকিয়ে আলতো
করে চোখ টিপ মারলাম। রিমি এবার তেলে বেগুনে জ্বলে
উঠলো। দাঁত কটমট করে আমার দিকে তাকালো।
আমি পাত্তা দিলাম না। হেসে হেসে তরীর সাথে টুকটাক কথা বলতে লাগলাম এবং এক পর্যায়ে আমাদের মুখ থেকে কথার ফুলঝড়ি ঝরতে হতে লাগলো।
কথা যেন শেষ-ই হচ্ছে না।
.
এদিকে,
তরীর সাথে কথা বলার সময় রিমি খালি ডিস্টার্ব করছে।
কখনো পায়ে সুড়সুড়ি দিচ্ছে, আবার কখনো হাতে
চিমটি কাটছে। শান্তি মত কথাও বলতে পারছিনা
পেন্তীটার জন্য। ইচ্ছা করছে রিমির গালে কষে একটা
চড় লাগাই কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে মারতেও পারবো না।
আমি দাঁতে দাঁত চেপে রিমির সব অত্যাচার সহ্য করতে
লাগলাম।
.
তরীর সাথে গল্প করতে করতে কখন যে সন্ধ্যা পেরিয়ে
রাত হয়ে গেছে খেয়াল-ই করিনি। সময় যেন চোখের
পলকে কেটে গেল। আমরা রাতে খাবার খেয়ে রেস্টুরেন্ট
থেকে বের হলাম। এর মাঝে রিমি কোনো কথা বলেনি।
একদম চুপচাপ ছিল। ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আমরা রাস্তার পাশে দাঁড়ালাম।
তরী আমার কাছাকাছি এসে আলতো করে আমার
হাতটা ধরলো। আমি হকচকিয়ে তরীর দিকে তাকালাম।
তরীর মুখে লজ্জার আভা ফুটে উঠেছে।
অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্বের মাঝে আছে সে।
আমার ডানপাশে থাকা রিমি অন্যদিকে তাকিয়ে কি
যেন ভাবছে আর বিরবির করছে।
আমার আর তরীর দিকে তার খুব একটা খেয়াল নেই।
.
এদিকে,
তরী আমার হাত ধীরে ধীরে শক্ত করে চেপে ধরলো।
আমার বেশ ভালো লাগছে। কিছুক্ষণ পর তরী মন খারাপ
করে বলল,
.
-- অনেক রাত হয়ে গেছে, শাহিন। আমাকে এখন বাড়ি
যেতে হবে। আব্বু-আম্মু চিন্তা করবে। (তরী)
.
-- আমি আপনাকে বাড়ি পৌছে দিয়ে
আসবো.? (আমি)
.
-- থাক, লাগবে না। আমি একাই যেতে পারবো।
আপনি শুধু একটা রিকশা ডেকে দিন। (তরী)
.
আমি তরীর জন্য একটা রিকশা ডেকে আনলাম।
তরী সামান্য হেসে বলল,
.
-- আজ আসি তাহলে। ইনসআল্লাহ খুব শীঘ্রই আবার
দেখা হবে। (তরী)
.
-- হুমম, সাবধানে যাবেন আর বাড়ি পৌছে আমাকে
ফোন দিয়েন। (আমি)
.
তরী মাথা নাড়িয়ে রিমির দিকে তাকালো।
হাসিমুখে বলল,
.
-- রিমি, শাহিনের সাথে একদিন আমাদের বাড়িতে
এসো। জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে।
.
রিমি কিছু বলল না। তরীকে এক নজর দেখে মুখ
ঘুরিয়ে নিল। তরীও আর কিছু না বলে চলে যেতে লাগলো।
কিন্তু দু'কদম এগিয়ে আমার দিকে ফিরে তাকালো।
তারপর দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। তরী আমাকে আষ্টেপিষ্টে
জড়িয়ে ধরে উত্তেজিত গলায় বলতে লাগলো,
.
-- আমি আপনাকে খুব ভালবাসি শাহিন.!
বিয়ে করবেন আমাকে.? কথা দিচ্ছি, আপনাকে
কোনদিন কষ্ট দিবো না। খুব সুখে রাখবো। (তরী)
.
আমার পুরো শরীর শীতল হয়ে গেল। মনে হচ্ছে, আমি ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
হাওয়ায় ভাসছি। আমি কিছু বলার আগেই তরী আমার
গালে গভীর কিস করলো.! তরী কিস করার সাথে সাথে
মনে হলো, আমি ১০০০ ভোল্টের শক খেয়েছি।
আমার সারা শরীরে অজানা এক শিহরণ বয়ে গেল।
আমি জড় পদার্থের মত অনড় দাঁড়িয়ে রইলাম।
কিছু বলার বা করার শক্তি পাচ্ছি না।
.
তরী আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
এবার আমিও আর থাকতে না পেরে তরীকে আলতো
করে জড়িয়ে ধরলাম। তরীর নরম শরীরের মাদকতা
ক্রমশই আমাকে তার কাছে টানছে।
তরী আমাকে ২য় তম কিস করতে যাবে তখন-ই রিমি
গগণ বিদারী চিৎকার দিয়ে বলল,
.
-- রাস্তার মাঝে কি শুরু করেছিস তোরা.?
লজ্জা করে না তোদের.? (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে তরী তাড়াহুরো করে আমাকে ছেড়ে
দিয়ে দু'কদম পিছে সরে গেল।
আমার দিকে চেয়ে আমতা আমতা করে বলল,
.
-- আই'ম স্যরি, শাহিন.! আসলে আমার কি যে
হয়েছে নিজেও জানি না।
ঝোকের বশে এমনটা করে ফেলেছি। (তরী)
.
-- ইট'স ওকে। তবে আমার খুব ভালো
লেগেছে। (আমি)
.
তরী লজ্জামাখা হাসি দিল। তারপর রিকশায় চেপে
চলে গেল। আমি তরীর চলে যাওয়ার পানে এক দৃষ্টিতে
চেয়ে রইলাম। ঘোর কাটলো রিমির কথায়,
.
-- দেখেছিস, কি নির্লজ্জ মেয়ে.! রাস্তার মাঝে কেমন
করে জড়িয়ে ধরেছিল। ছিঃ.! ফালতু মেয়ে একটা.! (রিমি)
.
আমি রিমির দিকে তাকালাম। সে কোমরে হাত দিয়ে
তীক্ষ্ণ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি রিমির কাছে এগিয়ে গেলাম। রাস্তার পাশে থাকা
সোডিয়াম লাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, রিমি অনেক রেগে আছে।
শুধু রেগে আছে বললে ভুল হবে, একেবারে ভয়ঙ্কর
ভাবে রেগে আছে। চোখ দিয়ে মনে হচ্ছে আগুনের ফুলকি
বের হচ্ছে.!
.
রিমির এমন রূপ আমি আগেও অনেকবার দেখেছি।
তাই ভয় না পেয়ে স্বাভাবিক গলায় বললাম,
.
-- তরী আমাকে জড়িয়ে ধরাতে তোর এত সমস্যা
কিসের.? আমাকে জড়িয়ে ধরেছে তাই যা বলার ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
আমি বলবো। (আমি)
.
-- তোর মত লুইচ্চা আর কি বলবে.?
তুই তো এগুলোই চাস। (দাঁতে দাঁত চেপে)
.
-- হ্যাঁ, এসবই তো চাই। তরী আমাকে জড়িয়ে ধরাতে
আমি ভীষণ খুশি হয়েছি।
মনে মনে আমি এটাই চাচ্ছিলাম। (সামান্য হেসে)
.
-- লুইচ্চা একটা.! (রিমি)
.
কথাটা বলে রিমি ফুটপাতে থাকা একটা বেঞ্চের
উপর গিয়ে বসলো। আমি কিছুক্ষণ ঝিম মেরে দাঁড়িয়ে
থেকে রিমির পাশে গিয়ে বসলাম।
রিমি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বিরবির করে আমাকে
গালি দিচ্ছে। বাপরে, মনে হচ্ছে এখনো রাগ কমেনি।
কিন্তু রিমি আমার উপর কেন রাগ করেছে সেটাই বুঝতে
পারছি না। আমি রিমির কোমরে গুতো দিয়ে বললাম,
.
-- বাড়ি যাবি না.? (আমি)
.
রিমি আমার কথার কোন জবাব না দিয়ে ওর
ফোনটা আমার দিকে বারিয়ে দিল।
শান্ত গলায় বলল,
.
-- আব্বুকে ফোন করে বল, তরীকে তোর পছন্দ হয় নি।
বিয়ে ক্যান্সেল করে দিতে। (রিমি)
.
আমি রিমির দিকে ভ্রু-কুঁচকে তাকালাম।
কিছুু সময় তাকিয়ে থেকে ঝাড়ি মেরে বললাম,
.
-- পাগল হয়ে গেছিস তুই.? এসব কেন বলবো.? (আমি)
.
-- কারণ তরীকে তোর পছন্দ হয় নি সেজন্য। (রিমি)
.
-- আমি এক বারও বলেছি সে কথা.?
এত বেশি বুঝিস কেন.? (আমি)
.
-- মানে কি.? (রিমি)
.
-- মানে হলো তরীকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।
তাকে বিয়ে করতে আমার কোনো অসুবিধা নেই। (আমি)
.
রিমি চোখ চোখ বড় বড় করে আমার দিকে
তাকালো। তারপর ধমক দিয়ে বলল,
.
-- চোখ ঠিক আছে তোর.? তরীকে তোর পছন্দ
হলো কিভাবে.? (রিমি) ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
-- কেন, অপছন্দ হওয়ার কি আছে.? তরী দেখতে সুন্দর, স্মার্ট, রূপবতী, ভালো মেয়ে এসব কারণ কি যথেস্ট নয় তরীকে পছন্দ হওয়ার জন্য.?
.
-- তুই কিন্তু কথার বরখেলাপ করছিস।
তুই বলেছিলি, তরীকে দেখার পর বিয়ে ক্যান্সেল
করে দিবি। (রিমি)
.
-- হ্যা বলেছিলাম কিন্তু এখন সেটা ফিরিয়ে নিচ্ছি।
তরীর মত ভালো মেয়ে আর পাবো না রে।
তাই তরীকে হাত ছাড়া করতে চাই না। (আমি)
.
-- গাধা.! তরী মেয়েটা একদম ফালতু মেয়ে.!
ক্যারেক্টার ঠিক নেই। নির্লজ্জের মত ছেলেদের গা'য়ে
ঢলে পড়ে। আর চামড়া সাদা হলেই কেউ সুন্দর
হয় না, বুঝলি.? (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে প্রচন্ড রাগ উঠলো। আমি কোনমত নিজেকে সামলে বললাম,
.
-- চামড়া সাদা হলে কেউ সুন্দর হয় না এটা মানলাম।
কিন্তু তাই বলে তরী অসুন্দর এটা মানতে পারছি না।
আমার চোখে তরী হলো পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মেয়ে।
তার রুপে আমি মুগ্ধ.! (আমি)
.
-- কুত্তা, তুই চোখের চিকিৎসা করা। এই বয়সেই কানা
হয়ে গেছিস তুই। আরে, তরী মুখে এত্তগুলো আটা-ময়দা
মেখে এসেছিল। তাই হয়তো একটু সুন্দর দেখাচ্ছিল।
না হলে ওটা একটা সাদা বক.! সাদা রঙের বিদেশী
পেন্তী.! (রিমি)
.
-- তুই মনে হয় খুব সুন্দর.? আয়নায় নিজের চেহেরা
দেখেছিস কখনো.? নিজে সারাদিন আটা-ময়দা মেখে
বসে থাকে আবার অন্যকে বলে।
তরীকে পছন্দ করেছি বলে তোর এত জ্বলছে কেন.?
ও বুঝেছি, তরী সুন্দর দেখে তোর হিংসা হচ্ছে
তাই না.? (রেগে)
.
-- একদম ফালতু কথা বলবি না, শাহিন।
তরীকে হিংসে করবো কেন.?
আমি কি তরীর থেকে কম সুন্দর নাকি.? (রিমি)
.
-- চুপ, একদম চুপ। একটা কথাও বলবি না।
অনেক হয়েছে। একটা কথা মাথায় ঢুকিয়ে নে, আমি
তরীকেই বিয়ে করবো.!
সে দেখতে সাদা বক হোক, কিংবা বিদেশী পেন্তী তাতে
আমার কিচ্ছু যায় আসে না।
আশা করি, তুই আমাদের মাঝে আসবি না।
নয়তো পরিণাম ভালো হবে না বলে দিলাম। (ধমক দিয়ে)
.
আমার কথা শুনে রিমি ছলছল চোখে আমার পানে তাকালো। কিছু বলতে গিয়েও বলল না।
অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল। মনে মনে বলতে
লাগলো, "তোর সাথে তরীর বিয়ে আমি কিছুতেই
হতে দিবো না। মরে গেলেও না।
তুই শুধু আমার আর আমার-ই থাকবি.!"
.
আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললাম,
.
-- অনেক রাত হয়ে গেছে, বাড়ি চল। (আমি)
.
রিমি আমার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকালো।
তেজ দেখিয়ে বলল,
.
-- যাবো না আমি। তুই আমার সামনে থেকে দূর হ। (রিমি)
.
-- ওকে, তোর ইচ্ছা। এখানে বসে বসে মশার কামড় খা।
আর শোন, পাশের গলিটায় সপ্তাহখানেক আগে একটা
গলাকাটা লাশ পাওয়া গিয়েছিল।
দেখিস, সেই লাশের ভূত তোর সাথে যেন গল্প
করতে না আসে। (সামান্য হেসে)
.
কথাটা বলে আমি চলে আসতে লাগলাম।
মিনিট দু'য়েক পর পিছনে তাকিয়ে দেখি, রিমি দৌঁড়ে
আমার পিছে পিছে আসছে।
আমি সামান্য হেসে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো একটা
রিকশায় চড়ে বসলাম।
রিমিও রিকশায় উঠল কিন্তু আমার থেকে দূরে ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
চেপে বসেছে। মূলত রিকশায় বসলে রিমি আমার
গা'য়ের সাথে লেপ্টে থাকে কিন্তু এই প্রথম তার ব্যতিক্রম
হলো। হয়তো তখনকার কথাগুলোর জন্য এখনো
রেগে আছে। থাকুক রেগে আমার কি.?
আমি অত রাগ ভাঙাতে পারবো না।
.
বাড়ি আসার পথে রিমির সাথে কোনো কথা হলো না।
পুরো রাস্তা চুপ করে কি যেন ভাবছিল।
চেহারায় চিন্তার ছাপ ছিল। আমি সেসবে পাত্তা দিই নি।
রিমি যা ইচ্ছা করুক শুধু আমার বিয়েতে ঝামেলা
না করলেই হলো।
.
বাড়ি ফিরে প্রথমেই মা'র সাথে দেখা। বাবা মনে হয়
অফিস থেকে ফিরেনি।
আজকাল তার কাজের ব্যস্ততা প্রচুর বেড়ে গেছে।
আমাকে দেখে মা আগ্রহ নিয়ে বলল,
.
-- কিরে, তরীকে কেমন দেখলি.? (মা)
.
-- কি বলবো মা, তরী সাক্ষাত পরী.! তোমার বউমা
এত সুন্দর হবে ভাবতে পারি নি। (আমি)
.
আমার কথা শুনে মা'র মুখে হাসি ফুটলো।
হাসিমুখে বলল,
.
-- তরীকে আমাদের বাড়ি নিয়ে আসতে পারলি না.?
ওকে একটু দেখতাম। (মা)
.
-- রাত হয়ে গেছে তাই আনলাম না। অন্য একদিন
নিয়ে আসবো। তাছাড়া আর কিছুদিন পর তো তরীকে
এই বাড়িতেই পার্মানেন্ট থাকতে হবে।
তখন যত খুশি দেখো। (আমি)
.
কথাটা বলে আমি ঘরে চলে আসলাম।
এদিকে,
শাহিনের মা রিমির কাছে গেল। রিমি মন মরা হয়ে
সোফায় বসে আছে। গোলগাল মুখটা এতটুকুন হয়ে আছে।
শাহিনের মা রিমির পাশে বসে শান্ত গলায় বলল,
.
-- রিমি মামুনি, তরীকে তোর কেমন লেগেছে.?
মেয়ে ভালো তো.? শাহিনের সাথে মানাবে কি.?
(শাহিনের মা)
.
-- কচু মানাবে। ওই মেয়ের সাথে শাহিনের বিয়ে
দিলে, শাহিনের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে। (রিমি)
.
-- কেন, কোন সমস্যা আছে.? (ভ্রু-কুঁচকে)
.
-- তরীর চরিত্রে সমস্যা আছে। ওকে আমার মোটেও
সুবিধার মনে হয় না। ওর রূপের যাদুতে শাহিনকে
বশিকরণ করেছে। এখনো সময় আছে বিয়েটা বন্ধ
করে দাও। না হলে পম্তাতে হবে হু। (রিমি)
.
কথাটা বলেই রিমি হনহন করে চলে গেল।
শাহিনের মা রিমির চলে যাওয়ার পানে হা করে
তাকিয়ে রইলেন। তার মাথায় কিচ্ছু ঢুকলো না।
.
.
.
মাঝরাতে তরীর ফোনে ঘুম ভেঙে গেল। আমি ফোন
নিয়ে ছাদে কথা বলার জন্য গেলাম।
তরীর সাথে অনেকক্ষণ কথা বললাম। তখন রাত প্রায়
৩টা বাঁজে। ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
আমি ছাদ থেকে নেমে ঘরে ঢুকতে যাবো হটাৎ
রিমির ঘরের দিকে চোখ পড়লো।
রিমির ঘরের দরজা খোলা এবং লাইট জ্বলছে।
কি ব্যাপার, রিমি এখনো ঘুমায় নি নাকি.?
এত রাত অব্দি জেগে কি করছে.? আমি কৌতুহলবশত
রিমির ঘরের কাছে গেলাম। দরজাটা একটু ফাক করে
ঘরে উঁকি মেরে দেখি, রিমি ফোনে কি যেন দেখছে
আর কান্না করছে.!
.
.
চলবে.....?????
0 Comments