.
-- শুনলাম, শাহিনের সাথে তুমি প্রেম করছো.!
কথাটা কি সত্যি.? (রিমি)
.
-- হুমম সত্যি.! আমরা অনেকদিন থেকে
প্রেম করছি.! (শিলা)
.
শিলার কথা শুনে রিমি হাজার ভোল্টের শক্ খেল।
রিমি ঠিক কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।
রাগে তার শরীর থরথর করে কাপতে লাগলো.!
রিমি, শিলাকে মারার জন্য তার ব্যাগ থেকে একটা চাকু
বের করলো.!
.
এদিকে,
রিমির হাতে চাকু দেখে শিলা বেশ ঘাবড়ে গেল।
শিলা জানে রিমির প্রচন্ড রাগ কিন্তু তাই বলে চাকু
নিয়ে আসবে সেটা ভাবে নি। শিলা ভয়ে একদম চুপসে
গেছে। কাঁপাকাঁপা গলায় বলল,
.
-- চা... চা... চাকু দিয়ে কি করবে রিমি আপু.? (শিলা)
.
-- তোমাকে খুন করবো.! (রিমি)
.
-- কেন.? (কান্নার সুরে)
.
-- তুমি শাহিনের সাথে প্রেম করবে কেন.?
তোমার সাহস তো কম না.! (রেগে)
.
-- আপু আমি শাহিন ভাইয়ের সাথে প্রেম করি না।
আমি তো মজা করলাম।
.
রিমি মনে মনে খুব খুশি হলো। যাক ভয় দেখিয়ে
কাজ হয়েছে। শিলাকে ভয় দেখানোর জন্যই রিমি চাকুটা
এনেছে। কিন্তু রিমি মন থেকে খচখচানি যাচ্ছে না।
রিমি সংশয় নিয়ে বলল,
.
-- সত্যি বলছো তো.?
. ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
-- তিন সত্যি.! তাছাড়া আমি রিফাতকে
ভালবাসি, তাই শাহিন ভাইকে ভালবাসা কিংবা তার
সাথে প্রেম করার কোনো প্রশ্নই আসে না।
আমি তো জাস্ট মজা করে বলেছি, শাহিন ভাইয়ের
সাথে প্রেম করি।
.
রিমি একটা সস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। এখন খুব শান্তি লাগছে তার। খুশিতে প্রাণখুলে হাসতে ইচ্ছা করছে।
কিন্তু রিমি হাসলো না। সে যে খুব খুশি সেটা নিজের মর্ধ্যে
দমিয়ে রাখলো। চেহেরায় গম্ভীরভাব এনে বলল,
.
-- বেঁচে গেলে। শোন, তুমি শাহিনের থেকে দূরে থেকো।
শাহিন আমার ভাই হলে কি হবে, ও কিন্তু খুব খারাপ.!
মদ, গাঞ্জা, সিগারেট এসব খায়.!
অনেক মেয়ের সাথে রুমডেটও করেছে।
ওর থেকে সাবধানে থেকো, ঠিক আছে.?
কথা বলতে আসলে কথা বলবে না। বলা যায় না
কখন কি করে বসে.! (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে শিলা বেশ অবাক হলো।
এতক্ষণে শিলার ভয়টাও কিছুটা কমে গেছে।
শিলা সাহস করে বলল,
.
-- মিথ্যে কেন বলছো, আপু.? আমি জানি, শাহিন
ভাই এসব কিছুই করে না। ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
খাওয়ার মধ্যে শুধু ওই সিগারেট'টাই খায়।
এছাড়া আর কোনো বদ অভ্যাস তার মধ্যে নেই। (শিলা)
.
-- আমার চেয়ে বেশি জানো তুমি.? কতদিন ধরে শাহিনকে
চেন.? আমি সেই ছোটবেলা থেকে ওকে চিনি।
আমি ওর সম্পর্কে জানবো না তো কে জানবে.?
তোমাকে শাহিনের থেকে দূরে থাকতে বলেছি, দূরে
থাকবে। (চোখ পাকিয়ে)
.
-- আচ্ছা, থাকবো। (মুখ ভার করে)
.
-- ঠিক আছে, আমি তাহলে এখন যাই। (রিমি)
.
-- দাঁড়াও, আপু.! (শিলা)
.
-- আবার কি.? (রিমি)
.
-- শাহিন ভাই, আমার সাথে প্রেম করে কি-না এটা
জানার জন্য আমার কাছে ছুটে এলে কেন.?
শাহিন ভাই, যদি আমার সাথে প্রেম করেও থাকে, তাহলে তোমার এত জ্বলছে কেন.? (শিলা)
.
-- সেটা আমার ব্যাপার.! তোমার না ভাবলেও চলবে।
আর হ্যা, শাহিনের সাথে প্রেম করা তো দূরে
থাক, ওর ধারের কাছে গেলেও তোমাকে খুন করে ফেলবো.! (প্রচন্ড রেগে)
.
রিমির কথা শুনে শিলা ভয় পাওয়ার বদলে উল্টো
হাসা শুরু করে দিল। হাসতে হাসতে বলল,
.
-- বুঝতে পেরেছি, তুমি শাহিন ভাইকে
ভালবাসো, তাই না.?
সেজন্য তুমি শাহিন ভাইয়ের নামে এসব মিথ্যা কথা
বললে, যাতে আমি তার সাথে না মিশি, তাই তো.? (শিলা)
.
রিমি, শিলার কথার উত্তর না দিয়ে মুচকি হেসে
সেখান থেকে চলে এলো।
দূর থেকে দেখলো, শাহিন ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা
দিচ্ছে আর সিগারেট টানছে.!
সেটা দেখে রাগে রিমির শরীর দাউ-দাউ
করে জ্বলে উঠলো। সে ঝড়ের বেগে শাহিনের
সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
.
এদিকে,
রিমিকে দেখার সাথে সাথে শাহিন সিগারেট'টা
ফেলে দিলো। ভয়ে একদম কাচুমাচু হয়ে বসে রইলো।
রিমি এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ শাহিনের দিকে তাকিয়ে
থেকে চোখ-মুখ শক্ত করে বলল,
.
-- : দেখতেই তো পাচ্ছিস। (আমি) ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
-- লজ্জা করে না তোর.? (রিমি)
.
-- উহু, কিসের লজ্জা.? (আমি)
.
-- কসম খেয়ে সেটা ভেঙে দিস.! (রিমি)
.
-- ওটা মিথ্যে কসম ছিলো। (সামান্য হেসে)
.
-- বান্দর একটা.! দেখিস, যেদিন আমি
থাকবো না, সেদিন এই কসমের মর্ম বুঝবি.! (রিমি)
.
-- তো থাকতে বলছে কে.?
যা এখান থেকে... (আমি)
.
-- কি বললি.? (চোখ পাকিয়ে)
.
-- কিছু না। বললাম, ক্লাসে যা। (আমতা আমতা করে)
.
রিমি কিছু না বলে আমার বন্ধু রিফাতের
দিকে তাকালো। চোখ গরম করে বলল,
.
-- তুই শাহিনকে সিগারেট খাওয়া শিখিয়েছিস, তাই না.?
তোর জন্য শাহিন খারাপ হয়েছে.! (রিমি)
.
-- আজব তো.! আমি কেন ওকে সিগারেট
খাওয়া শিখাবো.?
উল্টো শাহিনের জন্য আমি সিগারেট খাওয়া
শুরু করেছি। (রিফাত)
.
-- একদম মিথ্যে বলবি না। তোদের মত বন্ধুর জন্যই
ও খারাপ হয়েছে। এক বন্ধু সিগারেট খেলে অন্য বন্ধুরাও
তার দেখাদেখি খাওয়া শুরু করে দেয়। কেন শাহিন যখন
সিগারেট খাওয়া শুরু করেছিল, তখন তোরা মানা
করতে পারিস নি.? কেমন বন্ধু তোরা.?
তোদের জুতা পিটা করা উচিত.! (রিমি)
.
-- হু, সিগারেট খাবে শাহিন আর দোষ
হবে আমাদের, তাই না.? (রিফাত)
.
-- আবার কথা বলিস.! লজ্জা করে না তোর.?
দূর হ চোখের সামনে থেকে। (রিমি)
.
রিফাত আর কিছু না বলে মুখ গোমড়া করে চলে গেল।
.
-- এই বান্দরের দল, তোদেরও কি আলাদা
করে বলতে হবে.?
এখান থেকে যাবি নাকি জুতার বারি
খাবি, কোনটা.? (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে আমার অন্য বন্ধুরাও চলে গেল।
রিমি এবার আমার গাঁ ঘেষে পাশে বসলো।
.
-- ওদের এভাবে তাড়িয়ে দিলি কেন.? (আমি)
.
-- কেন, কি হয়েছে.? (রিমি)
.
-- অনেক কিছু। কত সুন্দর সবার সাথে আড্ডা
দিচ্ছিলাম কিন্তু তুই এসে সবাইকে তাড়িয়ে দিলি। (আমি)
.
-- বেশ করেছি। ওসব ফালতু ছেলেদের
সাথে আড্ডা দিস কেন.? (রিমি)
.
-- তাহলে কার সাথে দিবো, শুনি.? (আমি)
.
রিমি আলতো করে আমার কাধে মাথা রাখলো।
মিষ্টি স্বরে বলল,
. ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
-- আমার সাথে দিবি। আমার সাথে আড্ডা দেওয়া
যায় না, বুঝি.? (রিমি)
.
-- তোর মত পেন্তীর সাথে কে আড্ডা দিবে.?
সারাক্ষণ শুধু বকবক করা আর অকাজের কথা। (আমি)
.
-- ওই আবার শুরু করলি.? ভালো হচ্ছে না কিন্তু.!
(চোখ গরম করে)
.
-- আচ্ছা, স্যরি.! (আমি)
.
-- হুমম। আর তুই না বললি, শিলার সাথে প্রেম করিস
কিন্তু শিলা তো না বললো। আমি একটু আগে শিলার
সাথে কথা বলে এলাম।
.
আমি রিমির দিকে কপাল কুঁচকে তাকালাম।
পেন্তীটা তাহলে শিলার সাথে দেখা করতে গেছিলো।
আমি বুঝিনা আমার প্রেম করা নিয়ে রিমির এত
সমস্যা কিসের। আমি রিমিকে রাগানোর জন্য বললাম,
.
-- প্রেম এখনো করি নি তবে আজকালের মর্ধেই করবো।
শিলাকে তোর ভাবি বানিয়েই ছাড়বো.! (আমি)
.
-- ফালতু কথা রাখ। শিলা তোকে পাত্তায় দিবে না। (রিমি)
.
-- ১০০% দিবে.! আজকেই শিলাকে প্রপোজ
করবো.! (আমি)
.
-- তোর কি মাথা খারাপ.? আরে, শিলাকে তোর বন্ধু
ভালবাসে.! তাছাড়া শিলাও রিফাতকে ভালোবাসে.! (রিমি)
.
-- তাতে কি, আমিও রিফাতের পাশাপাশি শিলাকে
ভালবাসবো.! চুটিয়ে প্রেম করবো.! (শয়তানি হাসি দিয়ে)
.
-- তুই আসলেই একটা বান্দর.! লজ্জার ছিটেফোঁটাও নেই
তোর মর্ধ্যে। এত প্রেম করার শখ কেন.? (বিরক্ত হয়ে)
.
-- প্রেম তো আমার প্রতিটা শিরা-উপশিরা, প্রতিটা কোষে
লুকিয়ে আছে। আমার প্রেম করার শখ জাগবে না তো
কার জাগবে.? (ভাব নিয়ে)
.
-- হুহ্... যতই জারিজুরি কর, তোর কপালে
প্রেম, ভালবাসা নেই। (রিমি) ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
-- থাকবে কেমনে, আজ পর্যন্ত তুই আমাকে প্রেম
করতে দিয়েছিস.? সবসময় আমার সব কাজে তুই
ব্যাগড়া দিয়েছিস। আচ্ছা একটা কথা বলতো, আমি
কারো সাথে প্রেম করলে বা কাউকে ভালবাসলে
তোর এত জ্বলে কেন.? (আমি)
.
-- বাজে বকিস না। তুই প্রেম করলে আমার জ্বলবে কেন.?
তুই জাহান্নামে গিয়ে মর.! (রিমি)
.
-- বুঝেছি, তুই কাউকে ভালবাসিস না তো... তাই কাউকে
ভালবাসতে দিসও না। (আমি)
.
-- কে বলছে আমি কাউকে ভালবাসি না.??
আমিও একজনকে ভালবাসি.! (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে আমি চমকে উঠলাম।
মেয়ে বলে কি.!
.
-- What.? তোর মত মেয়ে কাউকে ভালবাসে.?
সিরিয়াসলি.? (আমি)
.
-- কেন আমি কাউকে ভালবাসতে পারি না.? (রিমি)
.
-- হ্যা, পারিস। (আমি)
.
-- তাহলে বলছিস কেন.? আমি একজনকে খুব
ভালবাসি.! নিজের চাইতেও বেশি.! (রিমি)
.
-- বাপরে.! তা এসব কবে থেকে.? (আমি)
.
-- উমম, অনেক আগে থেকে.! (রিমি)
.
-- বলিস কি.! এই ছেলেটা কে রে.? (রিমির কাছে ঘেষে)
.
-- উহু, বলা যাবে না। (রিমি)
.
-- বল না, প্লিজ.! আমিও দেখি তোর পছন্দ
কেমন.! (আমি)
.
-- পরে বলবো।
.
-- ধুরর, তুই এমনি করছিস কেন.? আমি জানলে কি হবে.? বলনা তুই কাকে ভালবাসিস.?
কে সেই হতভাগা.? আমি খুব এক্সাইটেড হয়ে আছি
তাকে দেখার জন্য.! (আমি)
.
-- শাহিন, ভালো হচ্ছে না কিন্তু.! (রেগে)
.
-- আরে, মজা করলাম। প্লিজ, এবার বল... আমি আর
ওয়েট করতে পারছি না। (আমি)
.
-- রাগ করবি না তো.? (রিমি)
.
-- ধুররর পাগলি রাগ করবো কেন.?
তুই নির্দ্বিধায় বল কাকে ভালবাসিস.! (আমি)
.
রিমি আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ
বন্ধ করে নিলো। লম্বা শ্বাস নিয়ে বলতে লাগলো,
.
-- আমি ত.... ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
রিমি পুরো কথাটা বলার আগেই হটাৎ কে যেন
আমার কাধে হাত রাখলো।
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি..... ?????
.
.
.
চলবে.... ??????