অবুঝ ভালবাসা

রাত্রে খাবার শেষ করে রোহান নিজের রুমে যাই।ফোন টা হতে নিয়ে নেট টা অন করতেই কিছু একটা দেখে সে অবাক হয়ে যাই।
ম্যাসেজ এর ভিড়ে 2 মিনিট তাকে ফোন টা just হাতে নিয়ে থাকতে হয়। এত্ত জন মেসেজ করছে বাবা রে ।এটা দেখে রোহান অবাক হয়ে যাই। weblovelystory অবুঝ ভালবাসা
কলেজ এর এমন কোনো মেয়ে বাদ নেই যে তাকে টপার হওয়ার জন্য
congrats
বলেনি।সেই লিস্ট থেকে তমাও বাদ যায়নি।একে একে সে সব মেসেজ গুলো পড়ে।অনেকে proposal ও দিয়েছে। এগুলো দেখে হাসি পায় রোহান এর। কলেজ এর মেয়েদের মধ্যে শুধু মাত্র হিয়াকে সে প্রাধান্য দেই।বকি মেয়েদের তার পছন্দ হয় না।এক একটা মেয়ের 3 থেকে 4টা করে বয় ফ্রেন্ড।বাবা রে ।ওরা যে এতগুলো পাই কোথায়।আমি তো আমার একটারেই খুঁজে পাচ্ছি না।
ও আমার ড্রিম গার্ল কোথায় লুকিয়ে আছো তুমি। এবার ত অন্তত দেখাটা দাও,নইলে তোমার রোহানকে তো সবাই তুলে নিয়ে যাবে দেখছি,যা অবস্থা🤭।না না এত বড় সাহস কারো নেই যে রোহান কে তুলে নিয়ে যাবে।আমি সেই আমার ড্রিম গার্ল এরই আছি । যার জন্য আমি আজ পর্যন্ত কাওকে হ্যাঁ বলিনি। তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো।
কথাগুলো নিজের মনেই বলতে থাকে সে। হোয়াটসঅ্যাপ থেকে বেরিয়ে এসে এবার একটু ফেস বুক এ যায়।দেখা যাক এইদিক এর অবস্থা।
নাহ আর পারিনা এত্ত গরম ,,,,,,,মুখে একরাশ বিরক্তির ভাব নিয়েই রোহান বলে ওঠে। ফ্যান চলছে তবুও গরম কমছে না ।একটু ব্যালকনির দিকে যাওয়া যাক।
ফেস বুক এ এমনই পরে আছি আমি ।একটু সবার প্রোফাইল চেক করা যাক।
রোহান এর একটা পুরনো অভ্যাস।সে সবার প্রোফাইল ঘাটতে পছন্দ করে।প্রোফাইল দেখে সে অনেক কিছু বলে দিতে পারে।এটা তার একটা অভিজ্ঞতা। weblovelystory অবুঝ ভালবাসা
অনেক্ষন যাবত প্রোফাইল ঘাটার পর সে নিজের মনেই ভাবতে থাকে।আজকাল কার সব মেয়ে গুলই প্রায় সমান। শান্ত ভদ্র মেয়ে বলে কিছু হয়না।মেয়েরা এমন নাহলে হয় নাকি।প্রোফাইল ঘাটতে ঘাটতে একজায়গায় গিয়ে তার চোখ আটকে যায়। মাশাআল্লাহ,,,,,, কথাটি আনমনেই সে বলে ফেলে।একটা মেয়ের প্রোফাইল। রাত্রি । হোয়াট এ নেম। প্রোফাইল ফটো দেখে যে কোনো ছেলে প্রেমে পরে যাবে।
রোহান মেয়েটার প্রোফাইল চেক করতে থাকে।1 মিউচুয়াল ফ্রেন্ড দেখাচ্ছে।আরেহ এটা কি ,,,,,,,,,?এই মিষ্টি মেয়েটার ফ্রেন্ড লিস্ট এ হিয়া শাকচুন্নি।ওই জন্যই 1মিউচুয়াল ।দ্বারা তুই দুষ্টু মেয়ে একটা ।তোর ফ্রেন্ড লিস্ট এ যে এমন একটা মিষ্টি মেয়ে আছে সেটা তো আমাকে বলিসনি।কাল দেখছি তোকে........
প্রায় আধ ঘন্টা হয়ে গেছে।রোহান এখনও ঘুমায়নি। রাত্রির প্রোফাইল চেক করে সে অবাক হয়েছে ভীষণ ।সে খুব ভালো ভাবেই তার মনোভাব আন্দাজ করতে পেরেছে।তাই নিজের অজান্তেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট টা সে রাত্রিকে send করেই ফেলেছে।কেনো.....?রোহান কোনো মেয়েকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছে ,,,,,,,,,হয়তো রাত্রিকে তার ভালো লেগেছে।
পরদিন কলেজ এ পৌঁছে দেখে অনিকেত ও হিয়া তার আগেই চলে এসেছে।
রোহান:- কিরে সব কেমন আছিস?তোদের সবার খবর কি?
অনিকেত:- এত্তখন এ তোর আসার সময় হলো।কতক্ষন থেকে অপেক্ষা করে আছি।
রোহান:- আর বলিস না ।এই বাসা থেকে আসতে একটু দেরি হয়ে গেলো ।আর কালকে রাত্রে ঘুমোতে দেরি হয়ে গেছিলো , যার জন্য সকালে উঠতে পারিনি।
হিয়া:- ও হো ।বুঝি বুঝি ।রাত্রে hello hello হচ্ছিলো । তো কোন মেয়ে ছিল রে বাঁদর।
রোহান:- আমি আবার কর সাথে hello করবো রে শাকচুন্নি। আরে তুই আমার অনেক বড় ক্ষতি করেছিস। দাড়া আগে তোর খবর টা নিই।
হিয়া:- কেনো আমি আবার তোর কি পাকা ধানে মই দিলাম।
রোহান:- হুম হুম তুই অনেক বড় ক্ষতি করেছিস।
অনিকেত:- আরে কি করেছে সেটা বলবি ত আগে।
রোহান:- রাত্রি কে........?????
হিয়া:- কোন রাত্রি? কিসের রাত্রি?আমি কীকরে জানব রাত্রি কে।
রোহান:- তোর ফেস বুক ফ্রেন্ড।
হিয়া:- ও হো,,,,,,,,,তুই ওই রাত্রির কথা বলছিস। হ্যা চিনি ত আমি রাত্রি কে।আমার একটা ফ্রেন্ড এর বেস্ট ফ্রেন্ড।আমার সাথে একবার দেখাও হয়েছিল।ভীষণ সুইট ও।আর খুব ভালো মেয়েও।কেনো কি হয়েছে।রাত্রি নিয়ে তোর এত সমস্যা কেনো........?
রোহান:- হুম হয়েছে।ভীষণ সমস্যা।
অনিকেত:- এই থাম থাম।তুই ওই মেয়েটার প্রেমে পরে যাসনি ত আবার।কারণ এতটা আগ্রহ নিয়ে কোনো মেয়ের ব্যাপারে কথা বলতে তোকে দেখিনি।
হিয়া:- হুম হুম সেটাই সেটাই।আমিও সেটাই ভাবছি।ব্যাপার কি তোর......????
রোহান:- আরে কিছু না । এমনি । ছার ত ওসব।চল কিছু খেয়ে আসি।
weblovelystory অবুঝ ভালবাসা
ওরা একটু আগতেই রোহান ফোন টা হতে নিয়ে ফেস বুক এ ঢুকে গেলো।নাহ মেয়েটা এখনও রিকোয়েস্ট টা একসেপ্ট করেনি।এটা দেখে অবাক হয়ে যায় সে ।যে ছেলে পুরো কলেজ এর ক্রাশ এমনকি আজ পর্যন্ত যে ছেলেকে কোনো মেয়ে এভয়েড করেনি তাকে এই মেয়ে একসেপ্ট করছে না। স্ট্রেঞ্জ 🙄।ব্যাপারটা ভীষণ আকর্ষণীয় মনে হয় রোহান এর ।বাহ মেয়েটা তাহলে সত্যিই ভীষণ ভালো।
রোহান:- এই হিয়া রাত্রি কোন কলেজ এ পড়ে রে ??
হিয়া:- রোহান এর কথা শুনে ভ্রু কুচকে । অবাক হয় ওর কথা শুনে ,কিন্তু কিছু বলে না।আমাদের কলেজের পাশের কলেজটিতে।1স্ট ইয়ার।বাড়িও কলেজ এর কাছেই।বাবা মায়ের ভীষণ আদরের মেয়ে।আর সব চেয়ে বড় কথা খুব ভালো মেয়ে।আর কিছু শুনবি তুই,,,,,,,,,?
রোহান:- বাবা রে ,,,,,,, এ তো দেখি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি😁।এই জন্যই তো তোকে আমার এত্ত ভালো লাগে শাকচুন্নি।
হিয়া:- হ্যা হ্যা আমি বুঝতে পারছি তুমি ডুবে ডুবে জল খাচ্ছো ।আর আমাদের সামনে স্বীকার করছো না।
অনিকেত:- হুম হুম আমারও তাই মনে হচ্ছে রে হিয়া।🙄
রোহান:- আচ্ছা শোন ।তুই আমার একটা কাজ করে দিতে পারবি কি ?
হিয়া:- কি বল?
রোহান:- রাত্রির ফ্রেন্ড লিস্ট এ ছেলে বন্ধু প্রায় নেই।ওই জন্য হয়তো ও আমার রিকোয়েস্ট টা একসেপ্ট করছে না।তুই ওকে একটু বল না ।
হিয়া:- ওহ এই ব্যাপার।আচ্ছা আমি ওকে বলে দেখবো।
রোহান:- গ্রেট । ইউ গুড গার্ল।
হিয়া:- হুম হুম হয়েছে অনেক। ক্যানো বলছিস সে তো ভালো ভাবেই বুঝতে পারছি।নে এবার উঠে পড়।বাসায় যেতে হবে।আমার আবার অনেক কাজ আছে।
অনিকেত:- হুম আমারও।
রোহান:- আচ্ছা চল এগোই। weblovelystory অবুঝ ভালবাসা
রাত হয়ে গেলো ।অথচ সে এখনও সাড়া দিলো না। রাত্রির নিস্তব্ধতায় ঘুমন্ত এই পৃথিবী।ঘুম নেই শুধু রোহান এর চোখে।ব্যালকনির পাশে দাড়িয়ে খুব শান্ত ভাবে বাইরের দিকে তাকিয়ে সে।একটানা ঝি ঝি পোকা ডেকে চলেছে।থেকে থেকে দূরে কোথাও একটা রাত জাগা পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে 🕊️।রাত অনেক হয়েছে।তবুও ঘুম আসছে না।কেনো সে নিজেও জানে না।ভীষণ ইচ্ছে হচ্ছে রাত্রির সাথে কথা বলতে।আজ সারাদিন ওর কথায় শুধু ভেবেছে সে।বাইরে এখন মৃদুমন্দ বাতাস বইছে।একটা হালকা শীতল শিহরণ তার দেহ মনে খেলে যায়।স্তব্ধ, নিঝুম ,অদ্ভুত এই রাত্রি।কেও অঘোর ঘুমে আচ্ছন্ন তো কেও নিশাচর এর মতো ভবঘুরে ছন্নছাড়া,,,,,,নির্ঘুম ভাবে জেগে আছে ,এই রাত্রে। সত্যিই বড়ই অদ্ভুত এই রাত্রি।ঘুম এলে কত কিছু ভুলিয়ে দেই তো ঘুম না এলে কত কিছু মনে করিয়ে দেই.............
চলবে........