ভালোবাসার প্রতারণা পর্ব:২
ভালোবাসার প্রতারণাবর্তমান
জারার হাত টান দিয়ে বেডের মধ্যে ফেলে দিয়ে আরিয়ান জারার উপরে উঠে গেল আর বলতে লাগলো
—- যা হয়েছে তা হওয়ারই ছিল। এমন কিছু করোনা যার ফল আরো খারাপ হয় এখন চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়। আর একটা শব্দ যদি পাই তাহলে আজ তোমার কপালে শনি আছে (ধমক দিয়ে)
জারা ভয় পেয়ে গেল কিছু বললনা। আর আরিয়ান জারার বুকেই নিজের মাথা রেখে ঘমিয়ে পড়লো। আরিয়ানের মুখে তৃপ্তির হাসি তাও চোখ থেকে দু ফোটা অবাধ্য পানি গড়িয়ে পড়লো সে যে তার জারাকে এভাবে কষ্ট দিতে চায়নি। জারা নিশব্দে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকালে,,,,
ঘুম থেকে উঠে জারা তার পাশে আরিয়ানকে দেখলো না নিজের দিকে তাকিয়ে আবারো কেঁদে উঠলো। সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় শাড়িটাও গা থেকে সরে গেছে। তার সাথে যা হয়েছে ভাবতেই বুক ফেটে যাচ্ছে। না এখন কান্না করলে চলবে না আগে নিজেকে পবিত্র করতে হবে বেডশীট টা জড়িয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার নিতে থাকলো। এমন তো হওয়ার কথা ছিলো না! কিভাবে হয়ে গেল? অঝোর ধারায় জারার চোখের পানি পড়ছে। শাওয়ার নেওয়ার পর মনে পড়লো সে তো সাথে করে কোনো ড্রেস আনে নি এখন কি হবে! হায় হায় বাহিরে বের হবে কিভাবে! পাশে তাকিয়ে দেখলো শুধু টাওয়েল আছে তাই আর কিছু না ভেবে টাওয়াল টা পেঁচিয়ে বের হয়ে আসলো। আশে পাশে তাঁকিয়ে কাউকে দেখলোনা তাই বের হয় আসলো।
—- বাসায় কি তুমি শুধু টাওয়াল পেঁচিয়েই থাকতে!
পেছন থেকে কারো এমন কথা শুনে জারা পেঁছন ফিরে দেখলো আরিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আরিয়ানকে দেখে লজ্জাই শেষ হয়ে যাচ্ছে জারা। এমনেতেও লোকটা খুব বাঝে তার উপর এই ভাবে জারাকে দেখে ফেলে উল্টা পাল্টা কিছু আবার করে না বসে এসব ভাবছে জারা। তখনি আরিয়ান আলমারি থেকে একটা রেড কালার শাড়ি নিয়ে আসলো। এসে জারার সামনেই দাঁড়ালো আর বলল
—- টাওয়েল টা খুলে ফেল।
—– না ( চিৎকার করে)
—– তুমি না বললেই আমি শুনবো নাকি !
বলেই জারার টাওয়ালটা খুলতে গিয়েও থেমে যায় তারপর জারা কে বলল ব্লাউজ আর পেটিকোট টা নিজে পড়ে নিতে আরিয়ান ভালো করেই জানে জারা শাড়ি পড়তে পারে না। তাই ও নিজেই পড়িয়ে দিবে। কিন্তু জারা রাজি হচ্ছিল না তাই আরিয়ান আর কোনো কথা না বলেই জারার টাওয়েল টা টান দিয়ে খুলে ফেললো আর নিজেই জোর করে শাড়ি পড়িয়ে দিল জারা শুধু কান্না করতেই লাগলো। আজ যে তার সব শেষ আরিয়ান জারার কানের কাছে গিয়ে বলল
—– লজ্জা পেয়ে লাভ নেই বউ। বিড়াল তো আমি কাল মেরেই ফেলেছিলাম ।
জারার খুব রাগ হলো আরিয়ানের দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাঁকাতেই আরিয়ান ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো তার পর জারার ঘাড়ে গলায় গভীর ভাবে চুমু খেতে লাগলো জারা কিছু করতেই পারছেনা ও যেন বরফের মতো জমে যাচ্ছে চাইলেও আরিয়ানকে সরাতে পারছেনা।
নিজেকে সামলাতে পারছেনা আরিয়ান। সে যে এক নেশায় ডুবে আছে। এদিকে জারার তো অবস্থা খারাপ। না পারছে নড়তে না পারছে আরিয়ানকে সড়াতে। দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দে আরিয়ানের হুস ফিরলো। জারার আঁচল ঠিক করে গিয়ে দরজা খুললো তখনি একজন মধ্যবয়সী মহিলা রুমে ঢুকলো আর আরিয়ানও রুম থেকে বেড়িয়ে গেল। মহিলাটি আবিরের মা।
—–জারা! আমি জানি যা হয়েছে তা তোমার মতের বিরুদ্ধে। কি করবো বলো আবিরটা যে এমন করবে ভাবতেই পারিনি। তোমার সম্মানের ব্যাপার ছিল তাই আমার বাবুই(আরিয়ান) তোমাকে বিয়ে করলো। তোমাকে তখন বলার মতো সময় মনে করা হয়নি তাই তোমার বাবা তোমাকে জানাতে মানা করেছিল।
—– মা আবির কি সত্যিই!(চোখ টবমল করছে)
——হুম।
কথাটা শুনেই জারার চোখের পানি টপ করে পড়ে গেল। আরিয়ানের মা ওকে জড়িয়ে ধরলো। দুজনেই কেঁদে দিল।
—- আমি কি এমন করেছিলাম? আমি তো কোন ভুল করিনি! কেন ও এমন করলো আমার সাথে! ও তো আমায় ভালোবাসতো। তাহলে সব কিছুই মিথ্যা ছিল? ছলনা ছিল?
—– জানি নারে মা। আবিরকে আরিয়ান অনেকবার কল করেছিল কিন্তু ও রিসিভ করে নাই শেষে একটা মেসেজ আসলো যে ও এই বিয়েটা করতে পারবে না। তখন তো আর কিছুই করার ছিল না তাই বাবুই আর তোমার বাবা এই সিদ্ধান্ত নেয়। তুমি তোমার অতীত ভুলে যাও মা। আমার বাবুই এর সাথে নতুন জীবন শুরু করো। বাহির থেকে যতোটা কঠিন ভেতর থেকে তার চেয়ে বেশি নরম। ও কাউকে একবার ভালোবাসলে তার সঙ্গ কখনো ছাড়েনা। ওকে ভালোবাসলে তুই ঠকবি না। আমার আবিরও এমন না কিন্তু ও এমনটা করলো কেন তা আমি এখনো ভাবতে পারছিনা। সে যাই হোক তুই নিচে আয় আমি খাবার দিচ্ছি।
—–হুম।
মিসেস রেবা চলে যাওয়ার পর জারা আবারো অতীতে ডুব দিল
—জারা জান আমার শুনো না!
—-‘-কি?
 
ভালোবাসার প্রতারণা
 
——হৃদয়ে লিখেছি তোমারি নাম।(একটু স্টাইল করে)
—— হুহ। মিথ্যুক।
—– আমার হৃদয়ে শুধু তুমিই আছো। তা হয়তো তোমাকে দেখাতে পারবোনা কিন্তু এইটা তো ঠিক পারবো
বলেই নিজের শার্ট এর বোতাম খুলে নিজের বুকের বা পাশে জারার নামের ট্যাটু টা দেখালো। জারা তো বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। জারা খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তার প্রিয়কে।
—— আই লাভ ইউ আবির।
——- আই লাভ ইউ দ্যা মোস্ট। কখনো তোমার হাত ছাড়বোনা জান। আগলে রাখবো সব সময় নিজের থেকে দূরে যেতেই দিব না।
—–এই ভাবে সব সময় আমায় ভালোবাসবে ! ভালোবাসার প্রতারণা
—–হুম। আই প্রমিজ ইউ।
—– ভালোবাসি প্রিয় খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়।
ঢুকরে কেঁদে উঠলো জারা চাইলেও কি ভুলা যায় সব কিছু! যায়না। অতীত এমন একটা জিনিস তা মানব জাতি কে তাড়া করে বেড়ায় সব সময়।
—– প্রেয়সী তুমি কি খুব বেশি আপসেট !
আরিয়ানের কথায় সামনে ফিরে তাকালো। খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
—– মম সেই কখন ডেকে গেল আর তুমি তো গেলেই না তাই আমিই তোমার ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসলাম। নাও খেয়ে নাও।
—- আমার ক্ষিদে নেই। (মুখ ঘুরিয়ে)
—— রেগে আছো তাই না। জারা যা হয়েছে আমি তা রাগের মাথায় করে ফেলেছি। এই স্যরি আর কখনো তোমার অনুমতি ছাড়া তোমায় টাচ্ করবোনা। আই প্র,,,,,
—– আপনি আমায় বিয়ে করলেন কেন?
—–মানে!
—-আমাকে বিয়ে করলেন কেন? আমাকে ভালোবাসেন!
জারার কথার জবাব আরিয়ানের কাছে থাকলেও তা দেয়া সম্ভব নয়। তাই চুপ করে গেল।
—– কি হলো বলুন ভালোবাসেন আমায়!
—–না।(গম্ভীর ভাবে)
......চলবে....
ভালোবাসার প্রতারণা