আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে

মেয়েটা যাচ্ছে আর বার বার পিছনে ফিরে তাকাচ্ছে । উফফ একটা মেয়ে যে এতটা সুন্দরী হয় সেটা একে না দেখলে জানতে পারতাম না।
আর একটু এলাকাটা ঘুরে বাসায় আসলাম । বাসায় এসে গেইট দিয়ে ঢুকতে যাবো ঠিক সেই সময় আবার কারো সাথে ধাক্কা
এবার ধাক্কা টা একটু আস্তে লাগলো । তাই পড়ে যাই নি । মাথায় হাত চেপে সামনে তাকাতেই দেখি আরে এটা তো সেই মেয়েটা। মেয়েটা কিছু বলার আগেই আমি শুরু করে দিলাম ।
আমিঃ বাহ ভালোই তো। হ্যান্ডসাম ছেলে দেখছেন তো তাই পিছু ছাড়ার নামেই নিচ্ছেন না।
মেয়েটিঃ মানে?
( মেয়েটা ভাবে নি যে আমি এমন কিছু বলবো)
আমিঃ মানে কি হ্যাঁ ? গায়ে পড়ে ধাক্কা খাচ্ছেন ইচ্ছে করে আবার মানে মানে করা হচ্ছে ।
মেয়েটিঃ কি??
( ধাক্কা লাগার পর যতটা রেগে যায় নি তার থেকে কয়েক গুণ বেশি রেগে গেছে আমার কথা শুনে । সেটা মেয়েটার মুখে তাকিয়ে বোঝা যাচ্ছে । সুমন আর বেশি কিছু বলিস না তাড়াতাড়ি পালা। নয়তো তোর গালে ব্যান্ড বাজাবে)
আমিঃ আর আপনার সাহস তো কম না। আমার পিছু পিছু বাসায় পর্যন্ত চলে আসছেন ? যান আপনার বাসায় যান। সুন্দর হ্যান্ডসাম ছেলে দেখলে মাথা ঠিক থাকে না তাই না ।
( এবার ডোজ টা একটু বড়ই দিলাম । কথাটা বলেই আমি তাড়াতাড়ি বাসার ভিতরে ঢুকলাম কারণ আবহাওয়া বিপদজনক মনে হচ্ছে)
আমি চলে আসার পর মেয়েটা বেশ কয়েক বার ডাকলো পিছনে থেকে । কিন্তু আমি শুনেও না শোনার ভান ধরলাম ।
নতুন জায়গায় কাউকে তো চিনি না । আম্মু যে কই আছে কে জানে?
ড্রয়িং রুমে বসে আম্মু কে ফোন দিলাম ।
আমিঃ হ্যাঁ আম্মু ।
আম্মুঃ বল।
আমিঃ কই তুমি ?
আম্মুঃ আমি তো বাসায় তুই কই?
আমিঃ আমি তো ড্রয়িং রুমে বসে আছি ।
আম্মুঃ আচ্ছা তুই ওখানেই থাক আমি আসছি।
আমি সোফায় বসে ফোন গুতোচ্ছি। একটু পরে আম্মু আর আন্টি আসলো।
আন্টিঃ কেমন লাগলো আমাদের এলাকা?
আমিঃ খুবই ভালো । আমার আব্বুটা যে কেন এই এলাকায় বিয়ে করলো না ।
আম্মুঃ এই এলাকায় বিয়ে করলে কি হতো?
আমিঃ তুমি জানো এই এলাকার মেয়েরা কতটা সুন্দরী?
আম্মুঃ তো?
আমিঃ তাহলে আব্বুর শ্বশুর বাড়ি এসে আমি আমার শ্বশুর বাড়ি খুজতে পারতাম ।
আম্মুঃ তাই? তোর শ্বশুর বাড়ি খোজার শখ হইছে?
আমিঃ ঠিক তা না। আম্মু একটা কাজ করি?
আম্মুঃ কি কাজ?
আমিঃ আব্বুকে এইখানে আর একটা বিয়ে দেই। তাহলে তোমায় কষ্ট করে আমার বউ খুজতে হবে না ।
আমার কথা শুনে আন্টি শব্দ করে হাসতে লাগলো।
আম্মুঃ কিছু মনে করিস না। আমরা এমনি সারাদিন বাসায় ঝগড়া করেই দিন কাটিয়ে দেই ।
আন্টিঃ আরে না । তোদের ঝগড়া দেখে আমায় ভালোই লাগছে । আমার ও যদি ওর মতো একটা ছেলে থাকতো

আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে
ধন্যবাদ
আমিঃ আরে আন্টি সমস্যা নেই আমি তো আছি । আমার মতো তো আর কেউ নেই ।
আন্টিঃ তাহলে এখন থেকে তুই আমারও সাথে ঝগড়া করবি ঠিক আছে ।
আম্মুঃ শুনছি সুখে থাকতে নাকি ভূতে কিলায়। আজ সেটা নিজের চোখে দেখলাম ।
আমিঃ না চাইতেই এমন ব্যান্ডের একটা ছেলে পাইছো তো তাই বুঝতে পারছো না।
আন্টিঃ ঠিক বলছিস।
আম্মুঃ বাহ। দুজন মিলে এখন আমার ব্যান্ড বাজানো হচ্ছে?
আমিঃ হিহিহি
সন্ধ্যায় একটা রুমে শুয়ে আছি । হঠাৎ আম্মু নিচে থেকে ডাকলো। তাই উঠে গেলাম । আম্মু আর আন্টি রান্না করছে ।
আমিঃ আম্মু ডাকলা কেন?
আম্মুঃ এই মরিচ পেঁয়াজ গুলো কেটে দে তো
আন্টিঃ ওকে বলছিস কেন? আমি দিচ্ছি তুই রুমে যা বাবা।
আম্মুঃ আরে ও সব পারে । তুই তোর কাজ কর। সুমন কি রে হা করে তাকিয়ে আছিস কেন?
আমিঃ হুম । বুঝলা আন্টি বাসার সব কাজ আমায় দিয়ে করায় ।
( একটু পার্ট নিলাম)
আন্টিঃ আহারে । তোর আম্মু কি করে?
আমিঃ কূটনীতি করে সারাদিন । কিভাবে আমায় আর আব্বুকে জ্বলানো যায় সেই বুদ্ধি করে ।
আন্টিঃ কি বলিস?
আমিঃ হ্যাঁ । আমার সহজ সরল আব্বুর জীবন টা তেজপাতা বানিয়ে দিছে ।
আমার কথা শুনে আন্টি আর আম্মু একসাথে হাসতে শুরু করলো ।
পেঁয়াজ কেটে দিয়ে আবার যেই রুমে ছিলাম সেই রুমে আসলাম ।
হাতে পেঁয়াজের গন্ধ লেগে আছে । তাই হাতটা ধোয়ার জন্য বাথরুমে গেলাম ।
বাথরুমে দরজা খুলতেই আমি যেটা দেখলাম সেটা দেখার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না।
ভিতরে কেউ একজন গোসল করছে । মুখে কি যেন দিছে তাই ফেস বোঝা যাচ্ছে না । তবে আমায় দেখে চিৎকার করলো এতে বুঝতে পারলাম ওটা একটা মেয়ে ছিলো ।
তাড়াতাড়ি বাথরুমে দরজা লাগিয়ে দিয়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসলাম । এখন ছাঁদে দাড়িয়ে আছি ।
এটা আমি কি দেখলাম?
না আমি কিছু দেখি নি।
আমি ভালো ছেলে । আর আমার তো কোনো দোষ নাই । কারণ আন্টি আমায় ঐ রুমে বিশ্রাম নিতে বলছে । আমি কিছু জানি না বাবা। তবে মেয়েটা কে?
সে যাই হোক না কেন তাতে আমার কি? নিজে বাচলে বাপের নাম।
.

আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে
.

একটু পরে কেউ একজন ছাঁদে আসলো। আমি সিয়র এটা বাথরুমে গোসল করা ঐ মেয়েটা । এসে আমার পিছনে দাঁড়িয়ে
মেয়েটিঃ আপনার সাহস তো কম না । আপনি সোজা আমার বাথরুমে ঢুকে পড়ছেন ।
আমিঃ সরি। আমি ইচ্ছে করে করি নি এমন।
মেয়েটিঃ আর আপনি কে হ্যাঁ ? দেখি এই দিকে ঘুরেন।
এইবার পিছনে ফিরে মেয়েটার দিকে তাকালাম । আমায় দেখে মনে হয় মেয়েটার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেলো। আর এইদিকে ভয়ে আমার ও হাটু কাঁপুনি শুরু হলো। এই জায়গায় আসছি থেকে এই মেয়ের সাথে ঝামেলা লেগেই আছে ।
সুমন এবার আর তোর রক্ষা নেই । তু তো গায়া বেটা।
মেয়েটিঃ তুই? তোর তো সাহস কম না । তুই আমার বাথরুমে,,
আমিঃ কিন্তু আমি কিছু দেখি নি ।
মেয়েটিঃ মানে?
আমিঃ আপনি তো গোসল করছিলেন আর তখন আমি ঢুকে পরি। কিন্তু আমি কিছু দেখি নি । আর যদি দেখেও থাকি কাউকে বলবো না সত্য কথা ।
মেয়েটিঃ তারমানে তুই,, তুই ,, ( রাগে ফোসফােস করছে) বল কি দেখছিস?
আমিঃ বলতেই হবে?
মেয়েটিঃ মানে ? কি দেখছিস বল
আমিঃ ঐ তো যা দেখার তাই ।
মেয়েটিঃ ( দাঁত কটমট শব্দ করছে ) যা দেখার তাই মানে?
আমিঃ রাগলে আপনাকে শ্যাওড়া গাছের পেত্নীর মতো লাগে ।
মেয়েটিঃ কি বললি? দারা ( আশেপাশে লাঠি খুঁজতে শুরু করলো)
সুমন নিজের জীবন বাঁচাতে চাস তো ভাগ।
মেয়েটিঃ ঐ কই যাস দারা বলছি ।
আমায় আর কে পায় এক দৌড়ে পগার পার ।
দৌড়ে রান্না ঘরে আসলাম ।
আন্টিঃ কি রে এভাবে দৌড়াচ্ছিস কেন?
আমিঃ অনেক দিন সকালে হাটতে যাওয়া হয় না তো তাই একটু দৌড়ে নিলাম ।
আম্মুঃ আচ্ছা দেখতো লবণ ঠিক হইছে কি না।
আমিঃ কই দাও দেখি।
আমি লবণ দেখার জন্য আগালাম । এমন সময় মেয়েটা পিছনে থেকে এসে আমায় মারতে শুরু করলো ।
আমিঃ কি করছেন লাগছে তো।
আন্টিঃ কি রে তুই ওকে মারছিস কেন?
মেয়েটিঃ সেটা পরে বলবো আগে বলো এই বেয়াদব টা কে?
আন্টিঃ তোর সুলতানা আন্টিকে তো চিনিসই । ওর ছেলে।

আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে
আম্মুঃ কি রে তুই আবার কি বেয়াদবি করছিস?
আমিঃ কি যে বলো না আম্মু । আমি কতো ভদ্র ছেলে আমি বেয়াদবি করতেই পারি না । আর যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে ওনাকেই জিজ্ঞেস করে দেখো তোমার ছেলে কোনো বেয়াদবি করছে কি না?
( আমি জানি মেয়েটা কিছু বলবে না তাই ওকে দেখিয়ে দিলাম)
আম্মুঃ ও কিছু বলবে না । তুমি বলো তো মা কি করছে এই হারামজাদা টা ।
মেয়েটাঃ ও আমার রুমে ঢুকছিলো।
আমিঃ মিথ্যা কথা । শুধু রুমে ঢুকছিলাম নাকি?
আম্মুঃ তো আর কি করছিস?
মেয়েটাঃ কিছু করে নি আন্টি ।
আন্টিঃ আমি ওকে তোর রুমে বিশ্রাম নিতে বলছিলাম । আর তুই তো বাসায় ছিলি না। কখন আসলি?
মেয়েটা আর কিছু না বলে চলে গেল ।
আম্মুঃ সত্যি করে বলতো কি করছিস?
আমিঃ আমি না হয় মিথ্যা বলবো কিন্তু মেয়েটা তো মিথ্যা বলবে না । শুনলাই তো কিছু করি নি । তোমার কাছে থাকাই যাবে না । খালি উল্টো পাল্টে প্রশ্ন করো। আন্টি তুমি কি করছো? ( আম্মুর কাছে থেকে আন্টির কাছে আসলাম)
আন্টিঃ দেখতেই তো পারছিস।
আমিঃ হুম । মেয়েটা কে গো?
আন্টিঃ আমার ছোট মেয়ে ।
আমিঃ বলেনি তো যে তোমার ছোট মেয়ে আছে । সেটাও আবার পরীর মতো ।
আন্টিঃ বললে কি হতো ?
আমিঃ সেটাই তো। আচ্ছা তুমি আমার মতো একটা ছেলে চাও তাই না ?
আন্টিঃ হুম । কেন?
আমিঃ একটু আপডেট হওয়া যায় না । এই বয়সে কি আর তোমার ছেলে হবে । আর যদি ভুল করে হয়েও যায় সেটা তো আমার মতো হবে না । সো আমাকেই জামাই বানাই নিলেই তো হয়। সব সমস্যার অবসান ।
আন্টিঃ এটা কি আপডেট টেকনিক নাকি? যে মেয়ের পরিবর্তে মেয়ের মাকে পটাচ্ছিস।
আম্মুঃ তোরা দুজন বিড়বিড় করে কি বলিস রে?
আমিঃ সেটা তোমার না জানলেও চলবে । এটা আমাদের সিক্রেট ব্যাপার ।
আম্মুঃ ওহহ।।
রাতে খেতে বসছি সবাই । সেখানে আপু আন্টির স্বামী সবার সাথে পরিচয় হলো। আন্টির স্বামী আরও বেশি রোমান্টিক মনে হচ্ছে । কিন্তু আন্টির ছোট মেয়ে টা এখনো আসে নি ।
আন্টিঃ তাছু( তাসফিয়া) দেখ তো তানজু এখনো আসছে না কেন?
( ওহহ আচ্ছা । তারমানে ঐ পরীর নাম তানজু)
তাছুঃ আচ্ছা দেখছি।
আমিঃ আপু আমি থাকতে তুমি কষ্ট করতে যাবে কেন? তুমি বসো আমি নিয়ে আসছি।
তাছুঃ নিয়ে আসতে পারবা? ও কিন্তু খুব জেদি ।
আমিঃ এই ব্যাপার? না আসলে কোলে করে নিয়ে আসবো। যদি পারমিশন দেয় আংকেল ।
আংকেলঃ দেখিস আবার ফালাই দিস না।
আমিঃ ওকে।
আমি এখন তানজুর রুমের সামনে । নক করবো নাকি না? না বাবা নক না করে ঢুকি পরে আবার দেখা যাবে ভিতরে কি না কি করছে । দরকার নেই ।
আমিঃ May I আসবো?
তানজুঃ না।
আমিঃ কেন?
তানজুঃ কোনো বেয়াদব কে আমি আমার রুমে এলাউ করি না ।
আমিঃ আপনি কি আমায় অপমান করার চেষ্টা করছেন?
তানজুঃ আপনার কি মনে হয় আমি আপনাকে আপমান করার চেষ্টা করছি?
আমিঃ তো?
তানজুঃ ডিরেক্ট অপমান করছি।
আমিঃ ওহহ আচ্ছা । ঠিক আছে আমি অপমান বোধ করলাম না ।
তানজুঃ আজব মানুষ তো।
আমিঃ হুম । খেতে ডাকছে । চলেন।
তানজুঃ আমি যাবো না ।
আমিঃ ওকে কোনো সমস্যা নেই ।
আমি রুমের ভিতর আসলাম । দেখি ও মনে হয় পড়ছে । কিন্তু আমি তো আবার আজব মানুষ । তাই ওকে কোলে তুলে নিলাম । নিয়ে নিচে আসলাম ।
কতগুলো যে মাইর হজম করতে হলো আল্লাহ ভালো জানে।
.
..
...
....
...
..
.
To be continue........