বড়  আপু যখন বউ 

বড়  আপু যখন বউ রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প

 

* জানো ফুয়াদ স্নেহার মতো মেয়ে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার ৷ (রনি)
* মানে বুঝলাম না (আমি)
* তুমি জানো না স্নেহা আর আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ৷ আমাদের পরিক্ষা শেষ হলে বিয়ে দেওয়া হবে ৷ (রনি)
রনির কথাটা শুনে বুকের ভেতরটা কেমন যেনো করতে লাগলো ৷ চোখ মুখ অন্ধকার হয়ে গেলো জানতাম এমন কিছু হবে ৷ কিন্তু এত তারাতাড়ি হবে তা বুঝতে পারি নি ৷ খুব খারাপ লাগছিলো ৷কি করবো বুঝতে পারছি না ৷এক নিমেষে মনে হয় সব শেষ হয়ে গেলো ৷ মনে হয় রনির কথা গুলো কোনো স্বপ্ন ৷৷ 
বড়  আপু যখন বউ রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প 
* কি হলো ফুয়াদ তুমি ঠিক আছ তো এমন অস্থির লাগছে কেনো তোমাকে ৷ (রনি)
* কই আমি তো ঠিক আছি ৷ (আমি)
* না মনে হচ্ছে খুব অস্তির হয়ে আছো ৷ (রনি)
*আসলে বাসায় যেতে হবে তারাতাড়ি তাই একটু তারা হুরোই আছি ৷ (আমি)
* ও আচ্ছা (রনি)
* আচ্ছা আমি চলে যাই। স্নেহা আপু আসলে বলে দিয়েন আমি চলে গেছি ৷ (আমি)
* এখুনি চলে যাবে । স্নেহা আসুক (রনি)
* না একটা বড় ক্লাইন্ট নক দেওয়ার কথা আছে ৷ আমাকে যেতেই হবে ৷ (আমি)
* আচ্ছা তাহলে যাও ৷ (রনি)
আমি ওখান থেকে বাসায় চলে আসলাম ৷ বাসায় এসে আব্বু আম্মুর ছবিটা হাতে নিয়ে বসে পরলাম ৷ খুব মিস করছি তাদেরকে আজ
কেনো তোমরা আমাকে এত তারাতাড়ি ছেরে চলে গেলে ৷ আমার মতো অভাগা হয়তো খুব কমি আছে ৷৷
ভালোবাসার মানুষ গুলো সব একে একে ছেরে চলে যায় ৷ প্রথমে তোমরা চলে গেলে ৷ এখন স্নেহা আপু ৷ আম্মু যানো
আমি না স্নেহা আপুকে খুব ভালোবাসি ৷
স্নেহা আপুর সাথে থাকলে তোমার কথা খুব মনে পরে ৷ স্নেহা আপু একদম তোমার মতো শাসন করে ৷ তুমি যেমন আমাকে খাইয়ে দিতে স্নেহা আপুও আমাকে মাঝে মাঝে খাইয়ে দিতো ৷ কোনো ভূল করলে বকা দিতো ৷
তুমি যেমন আমাকে একা করে ছেরে গেলে ৷
সেও চলে যাবে একদিন কিন্তু আম্মু জানো কি আমি না ওকে ভূলতে পারবো না ৷
তোমাদের যেমন আমি কোনোদিন ভূলতে পারবো না তেমনি তাকেও আমি কোনোদিন ভূলতে পারব না ৷ আমি কি করবো তোমরাই বলো খুব কষ্ট হচ্ছে আমার ৷ বুকের ভেতরটা পুরে ছারকার হয়ে যাচ্ছে ৷ শুধু তার কথাই মনে পরছে৷
আম্মু আব্বুর ছবি জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পরলাম ৷ মাঝ রাতে ঘুম ভাংলো ৷
ঘুম ভাংগার পরে মনে হলো ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো স্বপ্ন ছিল কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম কিছুই মিথ্যে না শুধু আজ আমার ভালোবাসাটা মিথ্যে হয়ে গেলো ৷৷ চাপা পরে গেলো কষ্টের ভাজে ঘুম থেকে উঠে যখন বুঝতে পারেন যে প্রিয় মানুষটা আর আপনার জীবনের অংশ হবে না তখন যন্ত্রণার সিমানা থাকে না ৷ তখন ইচ্ছে করে হয়তো আর ঘুম হয় না !!
সিগারেটের প্যাকেট টা নিয়ে জানালার পাশে গিয়ে বসলাম ৷ আজ চাদের আলোটাও কেমন যেন ফ্যাকাশে মনে হচ্ছে ৷ যে করেই হোক এই কষ্ট থেকে আমাকে সামলে উঠতে হবে । জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছি আর কষ্ট নিতে পারতো না ৷
সিগারেট ধরিয়ে বসে রইলাম ৷ এক সময় লক্ষ্য করলাম সিগারেট এর ফিলটার টা ভিজে গেছে ৷
তারপর চোখে হাত দিয়ে দেখি চোখ দিয়ে পানি পরছে ৷ হাতটা কাপছে , জোরে জোরে কান্না করতে লাগলাম ৷ আম্মু বলতো কান্না করলে বুকটা হালকা লাগে ৷ আজ খুব একা লাগছে ৷
সারা রাত কান্না করলাম ৷ কিছুটা হলেও বুঝতে পারলাম যে দুনিয়ায় কেউ কারো নয় । একা থাকাটাই ভালো যত কারো প্রতি মায়া বারাবেন ততো কষ্ট পেতে হবে।
(রিয়েল লাইফেও আমি এটাই ভাবি )
প্রায় এক সপ্তাহ লাগলো ৷ স্নেহা আপুর মায়াটা কিছুটা কাটিয়ে উটতে ৷ তারপরে ও তার সামনে গেলে নিজেকে আটকে রাখতে পারব কি না জানিনা ৷ তাই আর কলেজে যাব না ঠিক করলাম ৷ এভাবে দশ দিন কেটে গেলো ৷
ফোন টাও অফ করে রেখে দিছি যাতে কেউ ফোন দিতে পারে না ৷ এখনো রাতে ঘুমাতে পারি না ৷ তাই ঘুমের ওষুধ কিনে রাখছি ৷ ঘুমের ওষুধ খেয়ে রাতটা পার হয়ে যায় আর দিনের বেলা সিগারেট তো আছেই ৷ এই দশ দিনে সিগারেট খাওয়াটা একটু বেরে গেছে ৷ সকাল ঘুম থেকে উঠে একটা সিগারেট ধরিয়ে শেটা শেষ করে ব্রাশ করে বাইরে বের হলাম ৷ নাস্তা করে বাসায় গেলাম ৷ গিয়ে কাজ করতে লাগলাম ৷
এই দশ দিনে কাজ একদম করা হয়নি ৷ নিজের এক বছর চলার মতো যথেষ্ট টাকা আছে আর আব্বু আম্মু চলে যাওয়ার আগে যা রেখে গেছে তাতে আমার সারাজীবন চলে যাবে । তারপরেও ফ্রিল্যান্সিং করি ৷ সিগারেট খেতে খেতে কাজ করতে লাগলাম ৷
একটু পর দরজার বেল কে জেনো বাজালো ,,
দরজা খুলে দিতেই ৷ সামনে দেখি স্নেহা আপু দারিয়ে ৷ হাত উঠালো মারার জন্য তারপর কি যেন ভেবে হাতটা নামিয়ে নিলো ৷ চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে ৷ 
বড়  আপু যখন বউ রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প 
* কেমন আছিস ? (শুকনো কন্ঠে আপু)
* ভালো আপু তুমি ! (আমি)
* ভালো ৷ কেমন শুকিয়ে গেছিস খাওয়া দাওয়া করিস কি না ? (স্নেহা আপু)
* আসলে কাজের চাপে খাওয়ার কথা মনেই থাকে না (আমি)
* ও আমি তো ভাবছিলাম (স্নেহা আপু)
* কি ভাবছিলা ৷ (আমি)
* কিছু না । ভিতরে আসতে বলবি না ৷ (স্নেহা আপু)
* হ্যা,, আসো ৷ (আমি)
স্নেহা আপু ভিতরে এসে চারদিকে তাকালো ৷
* এটা বাসা নাকি সিগারেটের দোকান ৷ যেখানে সেখানে সিগারেটের প্যাকেট আর এত গন্ধ কেন (স্নেহা আপু)
*আসলে অনেকদিন ধরে পরিষ্কার করা হয় নি তো ৷ (আমি)
* ওহহ আজকেই এগুলো ছাপ করবো চল ৷ (স্নেহা আপু)
* কি বলছ আপু ৷ তোমার হবু বর দেখলে আমাকে মেরে ফেলবে ৷ (শুকনো হাসি দিয়ে আমি)
* হবু বর মানে ? (স্নেহা আপু)
* রনি ভাই আমাকে সব বলেছেন যে তোমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ৷ (আমি)
* তুই কথাটা শুনে খুব খুশি হয়েছিস না (স্নেহা আপু)
* অবশ্যই ৷ কাজের চাপে তোমাকে শুভেচ্ছা জানানোত কথা মনেই নেই ৷ এখন বলছি অনেক অনেক শুভেচ্ছা । রনি ভাইয়ের মতো একজন মানুষ জীবন সাথি হিসেবে পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার ৷ (আমি)
* হুম । চল আমার সাথে আজ কলেজে যাবি (স্নেহা আপু)
* আমি কলেজে গিয়ে কি করবো কলেজে গিয়ে আমার কেউ নেই কার সাথে আড্ডা দিবো বলো (আমি)
* কেউ নেই ৷ (স্নেহা আপু)
* আমার জানা মতে তো কেউ নেই ৷ তুমি যাও রনি ভাই হয়তো তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে কলেজে ৷ দেরি করে গেলে হয়তো অভিমান করতে পারে ।। (আমি)
আমার কথাটা শুনে স্নেহা আপুর মুখটা শুকিয়ে গেলো ৷ কিছু না বলেই চলে গেলো ৷
আমি একটা সিগারেট ধরিয়ে ওখানে বসে পরলাম ৷ মাথাটা খুব ব্যাথা করতিছে ৷
সন্ধ্যার দিকে ব্রিজে গিয়ে বসলাম ৷ ব্রিজের রেলিং এ বসে আছি ৷ তখন সামনের দিক থেকে কেউ একজন ডাক দিলো ৷গাড়ি চলালল করায় ভালো ভাবে দেখতে পারছিলাম না ৷
গাড়িগুলো সরে যাওয়ার পর দেখলাম ৷
একটা মেয়ে আমার দিকে আসছে ৷৷
বড়  আপু যখন বউ রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প 
*কেমন আছো ? (মেয়েটি)
*ভালো কিন্তু আপনাকে চিনলাম না ৷ (আমি)
* কিন্তু আমি তোমাকে চিনি ৷ (মেয়েটি)
*কেমন করে (আমি)
* তুমি আমার ক্লাসমেট তোমাকে চিনবো না ৷৷ (মেয়েটি)
* ওহহ কিন্তু আমি আপনাকে চিনলাম না ৷ (আমি)
* আমি দিশা (হাত বারিয়ে)
* ওহহ (আমি)
* কলেজে আসো না কেন আর ? (দিশা)
* ভালো লাগে না ৷ (আমি)
* কাল থেকে আসভে মনে থাকে যেন৷ (দিশা)
* দেখি ৷ (আমি)
*দেখি না আসতেই হবে । তোমার নাম্বারটা দেও (দিশা)
* কেন ? (আমি)
* দিতে বলছি দেও (দিশা)
ফোন বের করার সাথে সাথে স্নেহা আপুর ফোন !!
চলবে .....
বড়  আপু যখন বউ রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প