আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে

ভাবতেই খুব খারাপ লাগছে যে একজন ইভটিজার হিসাবে আজ পুলিশের হেফাজতে আমি । তাবে একটা জিনিস বুঝতে পারলাম ঝগড়ার মাঝে লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা টা সবাই দেখতে পায় না। শুধু ভাবছি তানজু এটা করতে পারলো?
আমার কেন জানি বিশ্বাস হচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবতা সবসময় নির্মম সত্য হয়।
পুলিশ আমায় কলার ধরে টেনে নিয়ে গাড়িতে উঠালো।
একজন পুলিশ আমার বাইক টা নিয়ে থানায় গেলো। আমি কিছু না বলে শুধু বসে বসে ভাবছি । যদি এই কথা বাইরে কেউ জানতে পারে তবে আমার মান সম্মান সব কিছু শেষ হয়ে যাবে।
এতদিন আমাদের জন্য এলাকার মেয়েদের কে কেউ বাজে কথা বলতে সাহস পায় নি । আর আজ সেই আমি ইভটিজার।
থানায় আসলাম । আমায় কারাগারে রাখা হলো কিছু সময় । এখানকার যিনি প্রধান কর্মকর্তা তিনি নাকি বাইরে গেছে । উনি আসলেই আমার নামে কেস ফাইল করা হবে ।
একটু পরে উনি আসলো। সবাই স্যালুট করছে । আমি পিছনে ফিরে দাঁড়িয়ে আছি । উনি কারাগারের সামনে আসলো।
প্রধান কর্মকর্তাঃ কাকে ধরে এনেছো?
একজন পুলিশঃ এই ছেলেটাকে স্যার।
প্রধানঃ অপরাধ কি?
পুলিশঃ ইভটিজার ।
প্রধানঃ কি? তাহলে ও এখনো দাঁড়িয়ে আছে কিভাবে ? এই হারামজাদা পাট নিয়ে পিছনে ঘুরে আছিস এদিকে তাকা।
আমি পিছনে ফিরে তাকালাম । আমায় দেখেই প্রধান কর্মকর্তা অবাক হয়ে গেল । আমি ও ওনাকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম । কারণ তিনি আমার বন্ধুর বড় ভাই ।
প্রধানঃ সুমন তুমি?
আমিঃ রাজ ভাইয়া তুমি এখানে?
রাজ ভাইয়াঃ আমি তো এখানেই এখন । কিন্তু তুমি ? এই ওকে বের করে আমার রুমে নিয়ে আসো। ( একজন পুলিশ কে বললো)
পুলিশঃ কিন্তু স্যার ওর বিরুদ্ধে ইভটিজিং এর অভিযোগ আছে ।
ভাইয়াঃ যাদের কারণে এলাকার মেয়েরা নিরাপদে চলাচল করতে পারে তারা আর যাই করুক ইভটিজিং করতে পারে না । যেটা বলছি সেটা করো।
পুলিশঃ yes sir...
একজন পুলিশ আমায় বের করলো
আমি বের হয়ে রাজ ভাইয়ার রুমে আসলাম ।
ভাইয়াঃ বসো।
( একটা চেয়ারে বসলাম)
ভাইয়াঃ এখন বলো এসবের মানে কি?
এরপর আমি ভাইয়াকে সব কিছু বললাম ।
ভাইয়াঃ চলো আমি তোমার সাথে যাবো।
আমিঃ কেন?
ভাইয়াঃ ঐ মেয়েকে মানহানির মামলায় ধরে নিয়ে আসবো।
আমিঃ না ভাইয়া। তবে যদি একটা হেল্প করতা তাহলে খুব ভালো হতো।
ভাইয়াঃ হ্যাঁ বলো তুমি । অবশ্যই করবো।
আমিঃ এই ঘটনা টা দয়া করে কাউকে বলবেন না প্লিজ ।
ভাইয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে । তুমি কি এখন চলে যাবে?
আমিঃ হ্যাঁ ।
ভাইয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে। আমার কার্ডটা নিয়ে যাও দরকার হলে ফোন দিও।
আমিঃ আচ্ছা ভাইয়া।
ভাইয়ার কার্ডটা নিয়ে আমি বাইক টা নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম। বিকেল টা শেষের দিকে । বাইক চালাচ্ছি আর শুধু তানজুর কথাই ভাবছি। একা একা মুচকি হাসছি । আমার এটা ভালো অভ্যাস কি মন্দ অভ্যাস সেটা জানি না তবে দুঃখ পেলে বা কষ্ট পেলে আমার খুব হাসি পায় । হয়তো এতে করে আশেপাশের মানুষদের থেকে নিজের কষ্ট টা লুকিয়ে রাখা যায় ।
সন্ধ্যার পর বাসায় ফিরলাম । বাসায় ঢুকতেই দেখি তানজু মহা আনন্দে টিভি দেখছে । আমি তানজুকে আর কিছু না বলে রুমের দিকে যেতে লাগলাম । তানজু একবার আমার দিকে বিরক্তি সূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার টিভির দিকে মন দিলো ।
আন্টিঃ কি রে কই ছিলি সারাদিন ?
তানজুঃ কই আর থাকবে হয়তো কোনো মেয়ের পিছনে পিছনে ঘুরতে গিয়ে পুলিশের দৌড়ানি খেয়ে বাসার রাস্তা ভুলে গেছলো।
( আমি তানজুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিলাম)
আমিঃ এই তো এদিকেই। তোমাদের এলাকাটা ঘুরে দেখলাম একটু।
(((আমার টাইমলাইনে একদিন আগে গল্প দেয়া হয়, যারা গল্প পরতে চান আমার আইডি থেকে পড়তে পারেন।)))ধন্যবাদ
আন্টিঃ ওহহ আচ্ছা । মুখটা কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে । যা ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খেতে দিচ্ছি ।
তানজুঃ পুলিশের ডান্ডা খেয়ে পেট ভরে নি বুঝি ( বিড়বিড় করে বললো। আমি পাশে ছিলাম জন্য শুনতে পেলাম । আন্টি একটু দূরে তাই হয়তো শুনতে পায় নি)
আমিঃ আচ্ছা আন্টি ।
আন্টি আবার নিজের কাজে মনোযোগ দিলো। আমি এই সুযোগে তানজুর হাত ধরে টেনে ওকে ওর রুমে নিয়ে আসলাম । কারণ আমি যে রুমে থাকি সেখানে সচরাচর সবাই যাতায়াত করে কিন্তু এই রুমে কেউ আসে না তেমন একটা।
আমি তানজুকে রুমে নিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম ।
তানজুঃ এই কুত্তা দরজা বন্ধ করলি কেন?
( আমার অনেকটা কাছে এসে)
আমিঃ ঠাসসসসসসসস ( তানজুর গালে সজোরে একটা থাপ্পড় দিলাম । )
তানজু থাপ্পড় টা খাওয়ার পর আমার কাছে আসলো আমায় মারার জন্য । আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে খাটের উপর ফালাই দিলাম । আমি ওকে আর কিছু না বলে দরজা খুলে বাইরে চলে আসলাম ।
আমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে ছাঁদে চলে আসলাম ।
আমার আগেই তানজু ছাঁদে এসে দাঁড়িয়ে আছে । নিজেকে বোঝালাম ওকে থাপ্পড় দেওয়া উচিত হয় নি । ও না হয় ভুলে একট ভুল করে ফেলছে তাই জন্য আমার এতটা রেগে যাওয়া ঠিক হয় নি।
আমিঃ তানজু আমি খুবই সরি।
( আমি হঠাৎ করে কথা বলায় তানজু একটু চমকে গেলো। কিন্তু একটু নড়ে আবার আগের মতোই দাঁড়িয়ে রইলো)
আমিঃ আমি রাগের মাথায় তোমায় থাপ্পড় টা দিয়েছি। আসলে আমি কখনো এমন সিচুয়েশনের মুখোমুখি হই নি । জীবনে আজ পর্যন্ত কোন মেয়েকে বিরক্ত করি নি । কিন্তু তুমি আমায় একজন ইভটিজার বানিয়ে দিলা। জানো তুমি আমায় ইভটিজার বানিয়ে দিছো এতে আমার তেমন কোনো দুঃখ নেই । কিন্তু এই কথাটা যদি আমার পরিবার জানতো তাহলে তারা কতটা কষ্ট পেতো সেটা কি একবার ও ভেবে দেখেছো?
আমি এই পর্যন্ত বলে থেমে গেলাম। ভেবেছিলাম হয়তো তানজু কিছু একটা বলবে কিন্তু না। তানজু কিছুই বললো না। এমনকি পিছনে ফিরেও তাকালো না।
আবার আমি বলা শুরু করলাম ।
আমিঃ আমি মানছি আমি তোমার সাথে সব সময় ঝগড়া করি। কিন্তু তুমি কি এটা বুঝতে পারো নি যে আমি তোমার সাথে কেন এতো ঝগড়া করি? হয়তো তোমার বোঝার বাইরে এটা। যাই হোক তুমি যখন এতটাই বিরক্ত ছিলে আমার উপর তাহলে একবার বলেই দিতে আমি নিজে থেকে তোমায় বিরক্ত করা ছেড়ে দিতাম । তাই জন্য এসব করতে হতো না । তুমি জানো তোমায় বিরক্ত করতে আমার খুবই ভালো লাগে । আর বিরক্তির সময় তোমার মুখের মাঝে যে বিরক্তিকর ছাপটা পড়ে সেটা আমার খুবই ভালো লাগে । তুমি যখন এতটাই বিরক্ত আমার উপর তাহলে আজকের পর থেকে তোমায় আর বিরক্ত করবো না । পারলে ক্ষমা করে দিও।
আমি আর কিছু না বলে চলে আসলাম । রুমে শুয়ে আছি । হঠাৎ আম্মু এসে খাওয়ার জন্য নিচে ডেকে গেলো।
আমিঃ আম্মু ( আম্মু চলে যাচ্ছিলো তাই ডেকে আটকালাম)
আম্মুঃ কিছু বলবি?
আমিঃ আমি কাল চলে যাবো
আম্মুঃ চলে যাবি মানে কি?
আমিঃ আমার একটা খুবই জরুরি কাজ আছে। আমাকে কাল যেতেই হবে ।
আম্মুঃ কিন্তু
আমিঃ প্লিজ ।
আম্মু আর কিছু না বলে চলে গেল । আমিও উঠে খেতে আসলাম । যদিও বা কোনো ইচ্ছে ছিলো না । সবাই খেতে বসে গেছে ।
আংকেলঃ কি হলো? আজ তুমি নিজেই পিছনে পড়লা কেন জানি?
আমিঃ এমনিতেই আংকেল ।
আন্টিঃ আয় তাড়াতাড়ি ।
আমি এসে খেতে বসলাম । আমার ঠিক সামনের চেয়ারে তানজু বসা।
আন্টিঃ কি রে তোর কি মন খারাপ?
আমিঃ কই না তো। আমি তো ঠিকই আছি
আম্মুঃ ও নাকি কাল চলে যাবে।
আন্টিঃ কি বলিস? বিয়ের তো আর মাত্র একদিন বাকি।
আম্মুঃ ওর নাকি কি জরুরি কাজ আছে
আন্টিঃ তোর আবার কি কাজ আছে রে?
আমিঃ আছে একটা কাজ। আর কাজ না থাকলে কি আমি যেতাম । তোমার সাথে যে ডিলটা হয়েছিলো সেটা পূরণ করতে হবে না । কিন্তু কাজ পড়ে গেলো তাই যেতে হবে ।
তাসুঃ তুমি গেলে তো অর্ধেক আনন্দ মাটি হয়ে যাবে।
আমিঃ আরে না । কি যে বলো না । আমি গেলে আনন্দ আরও বৃদ্ধি পাবে।
আন্টিঃ কখন যাবি?
আমিঃ কাল সকালেই ।
তাসুঃ বিয়ের দিন কিন্তু অবশ্যই আসার চেষ্টা করবা।
আমিঃ হুম
খাওয়া শেষ করে রুমে এসে কিছু সময় থেকে আবার ছাঁদে আসলাম । কেন জানি না কোথাও থাকতে ইচ্ছে করছে না । রুমেও ভালো লাগছে না ছাদেও ভালো লাগছে না ।
কারো পায়ের শব্দ শুনে পিছনে তাকালাম ।
তানজু ছাঁদে আসলো। ওকে দেখে আমি রুমের দিকে পা বাড়ালাম ।
তানজুঃ চাইলে থেকে যেতে পারেন
আমিঃ যেখানে তোমার উপস্থিতি কারো বিরক্তির কারণ সেখানে না থাকাই শ্রেয়।
আর কিছু না বলে তাড়াতাড়ি করে চলে আসলাম রুমে । মেয়েটাকে এই কয়েক দিনে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি মনে হচ্ছে । কিন্তু যে ভালোবাসা আমি তাকে অর্পন করি সে সেই ভালোবাসা বোঝার ক্ষমতাই রাখে না। তাই আমার ভালোবাসা আমার মনের গহীন কুঠুরিতেই বন্দী হয়ে থাক।
.
আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে
.

আমি রুমে শুয়ে আছি । শুয়ে থাকতেও বিরক্ত লাগছে । আসলে যখন একটা মানুষ নিজেই নিজের উপর বিরক্ত তখন তাকে সব কিছুই বিরক্ত মনে হয় ।
দরজায় কেউ নক করলো। মাথা তুলে দেখলাম আন্টি ।
আমিঃ আসো। ফর্মালিটিস মেইনটেইন করতে হবে না। তোমাদের তো বাসা যখন খুশি আসবা।
( আন্টি এসে আমার পাশে বসলো)
আন্টিঃ কি হইছে তোর?
আমিঃ কই কিছু না তো ।
আন্টিঃ তাহলে চলে যাচ্ছিস কেন?
আমিঃ আমার একটা জরুরি কাজ আছে । আর আমি এসব বিয়ে বৌভাত বার্থডে অনুষ্ঠানে খুবই কম যাই।
আন্টিঃ তাই জন্য তুই আমার মেয়ের বিয়েতে থাকবি না?
আমিঃ আমি আসার চেষ্টা করবো । এখন ঠিক আছে ।
আন্টিঃ তুই থেকে গেলেই তো হয়।
আমিঃ কাজটা খুবই দরকার আন্টি ।
আন্টিঃ আমি তোকে আর কিছু বলবো না । যদি তুই বিয়েতে না থাকিস তাহলে আমি আর তোর সাথে কথা বলবো না মনে রাখিস ।
আন্টি আমার পাশ থেকে উঠে চলে গেল । আমি পিছনে থেকে বেশ কয়েক বার ডাকলাম কিন্তু শুনলোই না।
পরের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে শুধু আম্মু কে আর আন্টিকে বলে চলে আসলাম।
আজ তাসুর বিয়ে
সকাল বেলা থেকে আন্টি আংকেল আম্মু সবাই অনেক বার ফোন দিছে । কিন্তু কারো ফোনই রিসিভ করলাম না ।
শুধু আব্বুকে ফোন করে বললাম আমায় যেন ফোন না দেয় কেউ । আমি ব্যাস্ত আছি ।
ওহহ হ্যাঁ । গতকাল আমি আসার পর আব্বু গেছে । আমাদের বাসা থেকে তানজু দের বাসায় যেতে ৩ ঘন্টা সময় লাগে ।
ফোনটা বন্ধ করে শুয়ে থেকেই সারাদিন কাটিয়ে দিলাম । যদিও আমি আসছি শুনে বন্ধুরা অনেক বার ফোন করে ডাকলো কিন্তু আমি বের হই নি।
বিয়ের পরের দিন আব্বু আম্মু বাসায় চলে আসলো।
আর আমি তো আগেই আসছি।
বেশ কিছু দিন বাসায় বসে শুয়ে কাটিয়ে দিলাম ।
কিন্তু না এভাবে তো আর থাকা যায় না । আর না যে আমি প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়েছি।
আমি কাউকে ভালোবেসেছি আর সে আমার অনুভূতী বুঝতে পারে নি ।
সিদ্ধান্ত নিলাম এভাবে আর না। আবার আগের মতোই হয়ে যেতে হবে । তবে প্রথম অনুভূতি তো একটু কষ্ট হবে ভুলতে কিন্তু অসম্ভব নয়। আর আমি তো ওর সাথে প্রেম করি নি । তাই ওকে মাথা থেকে ফেলে দিয়ে আবার আগের মতো বন্ধুদের সাথে আড্ডা ভার্সিটি এসব নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে গেলাম ।
এভাবেই কেটে গেলো অনেক দিন । মাঝে মাঝে আন্টির সাথে কথা হতো। তবে অনেক দিন থেকে আন্টির সাথেও কথা হয় না । আর তানজু? ওকে তো অনেক আগেই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছি।
আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে
যে আমার সম্মান নিয়ে খেলতে পারে সে আমার মন নিয়েও খেলতে পারে। তাই তাকে মন কেন মনের আশেপাশে ও রাখা উচিত নয়।
রেডি হচ্ছি। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে যাবো। এমন সময় আব্বু ডাকলো।
আমিঃ আব্বু ডাকলা?
আব্বুঃ হুম । কোথাও যাচ্ছো নাকি?
আমিঃ হ্যাঁ । একটু বাইরে যাবো।
আব্বুঃ ওহহ। একটা কাজ করতে পারবে
আমিঃ হ্যাঁ বলো ।
আব্বুঃ আমাদের বাসায় একজন মেয়ে মেহমান আসবে। তুমি তাকে বাসস্টপ থেকে বাসায় নিতে পারবা?
আমিঃ হ্যাঁ অবশ্যই । আর আমি ও তো ঐখানে যাচ্ছি ।
আব্বুঃ ওহহ আচ্ছা । ঠিক আছে যাও তাহলে । ও আর কিছুক্ষণ পর আসবে।
আমিঃ আচ্ছা ।
বাসস্টপেই সাকিবের বাসা। আমরা সচরাচর সাকিবের বাসার ছাঁদে বসে আড্ডা দেই। আর এখানে থেকে পুরো বাসস্টপ টা সুন্দর ভাবে দেখা যায়।
সাকিবঃ কি রে তোর সেই মেয়ে কখন আসবে ?
আমিঃ আমি কি জানি যখন আসবে তখন আব্বু ফোন দিয়ে জানাবে ।
সাকিবঃ ওহহ আচ্ছা । তো ও তোকে চিনবে কেমনে?
আমিঃ বলে দিবো যে বুকের মাঝে একটা তিন আছে আমার সেটা দেখে যেন চিনে নেয়।
সাকিবঃ বুকের মাঝে তিল কি সবার জন্য উন্মুক্ত নাকি
আমিঃ জ্বি না বস। এটা স্পেশাল মানুষের জন্য । ও তুই বুঝবি না ।
সাকিবঃ দোস্ত তোর বোঝা বুঝি তুই তোর কাছেই রাখ ঐ দেখ একটা সুন্দরী মেয়ে ।
আমিঃ তুই দেখ। তোর তো আর কাজ নাই ।
সাকিবঃ একবার দেখ তো । তারপর তুই ও চোখ সরাবি না।
আমিঃ কই দেখি ।
মেয়েটির দিকে তাকাতেই আমি ৪৪০ ⚡ শক খেলাম । এটা তো তানজু। তাহলে কি আব্বু একেই নিয়ে যেতে বলছে আমায়?
আমি আম্মুর নাম্বারে ফোন দিলাম।
আমিঃ আম্মু যে মেয়েটা আজ আমাদের বাসায় আসবে সেটা কি তানজু?
আম্মুঃ হ্যাঁ । কেন আসছে কি?
আমিঃ হ্যাঁ ।
আম্মুঃ তোকে সারপ্রাইজ দিবো জন্য বলি নি। তুই ওকে নিয়ে তাড়াতাড়ি আমাদের বাসায় আয়।
আমিঃ আমার একটু কাজ আছে আমি যেতে পারবো না । সাকিব কে নিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি । বাই।
আম্মুঃ কি? এই শোন
টু...টু...টু....
ফোনটা কেটে দিলাম ।
আমিঃ মেয়েটা অনেক সুন্দরী তাই না ।
সাকিবঃ হ্যাঁ ।
আমিঃ মেয়েটাকে নিয়ে আমাদের বাসায় ছেড়ে আসতে পারবি?
সাকিবঃ কি বলিস? তারমানে এটাই সেই মেয়ে?
আমিঃ হ্যাঁ । পারবি কি না সেটা বল
সাকিবঃ কি যে বলিস না । তুই কোনো কথা বলবি আমি সেটা রাখবো না সেটা কি হয় বল।
আমিঃ পাম না দিয়ে এই নে বাইকের চাবি। গিয়ে রেখে আয়।
সাকিবঃ দোস্ত হেতির লগে আমার সেটিং করাই দিবি?
আমিঃ আমি পারবো না । বাইক দিচ্ছি যেতে যেতে যদি পটাতে পারিস তো পটাই নে।
সাকিব গেলো। বন্ধু এক আজব জিনিস । এদের যদি সুন্দরী মেয়ের সন্ধান দেওয়া যায় তবে এরা মাথায় তুলে নাচবে।
সাকিব গিয়ে রেখে আসলো। আমি সাকিবের ছাঁদেই বসে ছিলাম । একটু পরে রাকিব হাবিব মারুফ ও আসলো। এরপর সবাই মিলে আড্ডা দিয়ে আমি রাতে বাসায় ফিরলাম ।
কলিং বেল বাজাতেই তানজু এসে দরজা খুলে দিলো । আমি দেখেও না দেখার ভান ধরে ভিতরে আসলাম ।
আম্মুঃ আজ এতো দেরি হলো যে?
আমিঃ একটা কাজ ছিলো তাই ।
আম্মুঃ ফ্রেশ হয়ে আয়। খাবার বেরে দিচ্ছি
আমিঃ খাবো না । ক্ষুধা পায় নি ।
রুমে চলে আসলাম । তানজুর দিকে তাকানো যাবে না । তাকালেই আমি আবার আগের মতো হয়ে যাবো । কারণ মানুষের মন কুত্তার লেজের মতো সোজা হয় না। নিজের যেটাতে ক্ষতি হবে মনটা সেটা তেই বেশি আগ্রহ দেখাবে।
রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে আছি । এমন সময় তানজু আসলো।
তানজুঃ আন্টি আপনার জন্য দুধ পাঠালেন ।
আমিঃ কারো রুমে আসতে হলে যে অনুমতি নিতে হয় সেটা জানেন না ? আর এটা অবশ্যই আপনার বাসা নয় যে আপনি যখন খুশি যে রুমে ইচ্ছে ঢুকে যাবেন।
তানজুঃ সরি।
( তানজু চলে যাচ্ছে)
আমিঃ আর শুনুন ( তানজু দাঁড়ালো) এটা নিয়ে যান। আমি খাবো না ।
তানজুঃ কেন খাবেন না?
আমিঃ আমার ইচ্ছে করছে না আমি খাবো না । আর কিছু?
তানজু আর কিছু না বলে দুধের গ্লাস টা নিয়ে চলে গেল ।
তানজুর সাথে এমন ব্যবহার করা ঠিক হয় নি। খুব খারাপ লাগছে এখন। কিন্তু কি করবো? স্বাভাবিক ভাবে কথা বললে তো আমারই সমস্যা হবে । এর থেকে ভালো ওকে এড়িয়ে চলা। ও যে কয়দিন আমাদের বাসায় থাকবে সে কয়দিন সকালে বের হবো আসবো রাতে । তাহলেই তো সব ঝামেলা মিটে যাবে। কাল থেকে এটাই করবো।
.
..
...
....
আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে
..
.
To be continue.....