ঠাসসসসস ঠাসসসসসস
রাইসা:তোকে না বলেছি আমাকে ম্যাম বলবি!(রেগে)
বলতে পারবো না।।
ঠাসসসসস,,
রাইসা: ম্যাম বলে ডাকবি না হলে তোর গালে এমন করে পড়বে।।
আর কেবিনে এলি তো বলে এলি না কেনো।(রেগে)
সরি,,আর এমন হবে না।।
রাইসা:মনে থাকে যেন ,আর নাম ধরে ডাকবি না।(রেগে)
হুঁ,
রাইসা: এবার এই প্রডাক্ট গুলো তৈরি কর।
তুমি বস,, তুমি করো।।
ঠাসসসসস
আবার মারলা কেনো?গালে হাত দিয়ে,গালে একটু ব্যাথা অনুভব করলাম।।
রাইসা:আমাকে তুমি বললি কেনো,, আপনি বলবি।(রেগে)
আচ্ছা,,,
রাইসা:যা এই প্রডাক্ট গুলো তৈরি করে নিয়ে আই।।
হুম,,
আমি আমার ডেস্কে বসে কাজ গুলো করতে লাগলাম।। এবার আমার পরিচয় টা দিয়ে দেই,,আমি রাকিব হাসান।।মা বাবাকে দেখেছি কিনা মনে পড়ে না।। আংকেলের কাছ থেকে শুনেছি আমার মা আর বাবা একটা এক্সিডেন্টে যারা,আর আমাকে ছেড়ে ঐ দূর আকাশে চলে যাই।। আংকেল বলতে রাইসার বাবা উনার কাছ বড়ো হয়েছে, আমাকে নিজের ছেলের মতো দেখে। আর রাইসা আমাকে দুই চোখে দেখতে পারেনা,সেই ছোট থেকে।।প্রায় সপ্তাহে দুই তিন দিন থাপ্পর খাওয়া লাগে,আর অপমান তো আছেই। আন্টি মানে রাইসার মাও এমন ছিলো,,আমাকে দেখতে পারতেন না।। আন্টি বেঁচে নেই অনেক স্ট্রোক করে মারা যান।। আল্লাহ তাঁকে যেন, জান্নাত দেন। সেই দোয়া করি। রাইসা কে ভালোবাসি, কিন্তু সাহস করে বলতে পারি না,, অফিসের সব কাজ আমাকে দিয়ে করাই আর নিজ বসে বসে সবসময় মোবাইল ফোন টিপে।কাজ করতে লাগলাম। প্রোডাক্ট তৈরির কাজ লাঞ্চের আগে শেষ হলো।তাই উঠে লাঞ্চ করার জন্য ক্যান্টিনে গেলাম,, তখন
রিমি:এই যে রাকিব সাহেব এই দিকে আসেন।।
না থাক,,
রিমি:আরে আসেন।।
হুম,,আসছি।
রিমি যেই টেবিল বসে ছিল সেখানে গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসলাম।।
রিমি:কি খাবেন?
যা খাবেন তাই অর্ডার দেন।।
রিমি:ওকে,,, এই ওয়েটার দুই প্লেট চিকেন বিরিয়ানি দেন তো।।
ওয়েটার: ওকে,,
ওয়েটার চলে গেল।
রিমি: কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি?
রিমি: আলহামদুলিল্লাহ ভালো,,
বাসার সবাই কেমন আছে?
রিমি: আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপন……
বলতে গিয়ে ও বললো না,,
রিমি:সরি,,
ইটস্ ওকে,,
রিমি: আপনার গার্লফ্রেন্ড নেই?
এই এতিম এর আবার গার্লফ্রেন্ড।।
রিমি: এমন বলেন কেন,,
তো আর কি বলবো।।
রিমি: কিছু না,,
ওয়েটার খাবার নিয়ে এলো,, খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম।। খাবার শেষ করে উঠে গিয়ে বিল আমি দিলাম।।
রিমি:এটা কি হলো?
কোন টা।
রিমি: আপনি বিল দিলেন যে?
তো,, সমস্যা কোথায়?
রিমি: অনেক,,আমি ডাকলাম আমি বিল দিতাম।।
কোথাও লেখা আছে নাকি।।
রিমি:তা না।
ওখান থেকে আমি আমার ডেস্কে এসে,, ম্যামের কেবিনের সামনে।।
আস্তে পারি ম্যাম,
রাইসা: ইয়েস,,
ম্যাম, প্রোডাক্ট গুলো তৈরি।।
রাইসা:ওকে ,রেখে যা।।
জী,, ডেস্কে চলে এলাম,, এখন কোন কাজ নেই।তাই পাশে থাকা একটা ফাইল নিয়ে উল্টাতে লাগলাম।।
ডেস্কে বসে আছি তখন,
রাইসা:এই বাসা যাবি না।।
জী,,
উঠে ব্যাগ নিয়ে,নিচে গাড়ির কাছে চলে এলাম।। গাড়িতে উঠলাম, রাইসা ও উঠলো। আমি গাড়ি স্ট্যার্ট দিয়ে চালাতে লাগলাম।।
বাসা চলে এলাম, রাইসা নামে ভিতরে চলে গেল আমিও গাড়ি পার্কিং করে ভিতরে গেলাম। আংকেল বসে আছে,,বসে বসে টিভি দেখছে।। আংকেলের পাশে গিয়ে বসলাম,,
দুপুরে ওষুধ খেয়েছো,,
আংকেল: হুঁ,, আর একটু কথা বলে আমি আমার রুমে চলে এলাম।। রাতে শুয়ে আছি, তখন ফোন বেজে উঠলো, দেখি রাইসা ফোন করেছে।কিরে এ আবার ফোন দেয় কেনো,,(মনে মনে)
কেটে দিয়ে রাইসার রুমের সামনে গেলাম,, আমাদের রুম পাশাপাশি,
আস্তে পারি,,(দরজায় টোকা দিয়ে)
রাইসা:আই,
জী বলেন,, কেনো ডাকলেন।
তখন একটা,ঠাসসসসস
গালে হাত দিয়ে, অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।।
মারলেন কেনো?
রাইসা:তোকে তো বলার জন্য ডাকছি,এতো তাড়াতাড়ি করিস কেন?(রেগে)
তাই বলে থাপ্পর দিবেন,।
রাইসা: হুঁ,,আর এখন কথা না বলে,,দেখতো ল্যাপটপে কি সমস্যা হয়েছে। কোন কিছু করতে পারছি না।।
জী,, তারপর ল্যাপটপ নিয়ে ঠিক করে দিলাম,,
ল্যাপটপ টা রেখে,, উঠে যেতে লাগলাম তখনই-
রাইসা:তোকে যেতে বলেছি,(রেগে)
না,,
রাইসা:তাইলে যাচ্ছিস কেনো।(রেগে)
জি বলেন,,
রাইসা:এই নে ফাইল গুলো নিয়ে যা,
এগুলো তো আপনাকে দেখতে হবে,, এগুলো আপনার কাজ।।
রাইসা: আরেক টা থাপ্পর খাবি। না নিয়ে যাবি?
আচ্ছা নিয়ে যাচ্ছি,,
ফাইল গুলো নিয়ে আমার রুমে চলে এলাম, এগুলো এখানে খারাপ লাগে না, এখান এগুলো অভ্যাস হয়ে গেছে।।
রুমে এসে একটু মোবাইল ফোন গুঁতাগুঁতি করতে লাগলাম। কিছু টেপাটেপি করার পর ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ফাইল গুলো নিয়ে বসলাম, বেশি না তিন টা ফাইল।।দেখা শেষ করে রাইসার রুমের সামনে গিয়ে টোকা দিলাম।।
রাইসা:কে?
আমি,,
রাইসা: ওহ্,, ভিতরে আই।
হুম, ভিতরে গেলাম।এই যে ফাইল গুলো দেখা হয়েগেছে। এবার তোমার সাইন করলেই হবে।। না সরি আপনার সাইন করলেই হবে।।
রাইসা:ওকে যা।
হুম,,, রাইসার রুম থেকে আমার রুমে চলে এলাম।। কিছুক্ষণ পর-
আংকেল:রাকিব , রাইসা তোরা খেতে আই।।
আংকেল এর ডাক শুনে খেতে আসলাম। রাইসা ও আসলো খাওয়া দাওয়া শেষ করে , রুমে এসে রেডি হয়ে আংকেল বলে অফিস এর দিকে রওনা হলাম।
রাইসা:এই একটু পার্কের দিকে চল তো।
কেনো?(অবাক হয়ে)
রাইসা:তোকে যেটা বলছি সেটা কর।
হুম,,,
পার্কের কাছে এলাম।
রাইসা: তুই একটু অপেক্ষা কর আমি আসছি।।
ওকে,,রাইসা চলে গেল।।আমি নামলাম, দেখার জন্য কি করো।
আমিও ভিতরে গেলাম। একটা এগিয়ে যেতে এক জায়গায় চোখ আটকে গেলাম। বুকের বাম পাশে একটু ব্যাথা অনুভব করলাম।। দেখি রাইসা আর একটা ছেলে বসে আছে খুব ক্লোজ হয়ে।। আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। আবার গাড়ির কাছে চলে এলাম।। আয়নার দিকে খেয়াল করলাম দুই চোখের কোনে পানি।মুছে নিলাম।।(মানুষের চোখ কত বোকা,এরা নিজেদের জন্য না অন্যের জন্য কাঁদে) একটু পর রাইসা আসলো।
রাইসা:চল,
হুম, আবার গাড়ি স্ট্যার্ট দিয়ে চালাতে লাগলাম। আয়নার দিকে তাকালাম, রাইসা কে দেখা যাচ্ছে।সে কতো খুশি। রাইসার হাসি মাখা মুখখানি কত সুন্দর।যে দেখবে তার মন ভালো হয়ে যাবে। আমার বোকা মন ভালো হয়ে গেল।। চেহারা মাসাআল্লা দুধে আলতা গায়ের রং।। প্রথম দেখাতেই যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে।।পাঁচ মিনিট পরে অফিসে চলে এলাম।
চলবে 👈👈👈👈👈👈