.
রাতে সবাই মিলে খেতে বসেছি তখন দেখি, বাবা
অফিস থেকে ফিরলো। হাতে অনেকগুলো মিষ্টির প্যাকেট।
মুখে মিষ্টি হাসি লেগে আছে।
বাবা মিষ্টির প্যাকেটগুলো টেবিলে রেখে চেয়ারে
বসল। মা খাবার বারতে বারতে বাবাকে বলল,
.
-- আজ এত দেরি করে বাড়ি ফিরলে যে.?
আর এত মিষ্টি এনেছো কেন.? (মা)
.
-- মা, নিশ্চয় বাবার প্রমোশন হয়েছে। (আমি)
.
-- আরে, সেটা না। তোর বিয়ে ঠিক
করে এলাম.! (বাবা)
.
বাবার কথা শুনে আমি হাজার ভোল্টের
শক খেলাম.! বাবা আমার বিয়ে ঠিক করে এসেছে.? কথাটা শুনে আমি যতটা না অবাক হয়েছি তারচেয়ে
বেশি অবাক মনে হয় রিমি হয়েছে।
রিমি আমার পাশে বসে চুপচাপ খাচ্ছিল কিন্তু বাবার
কথা শুনে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে।
চোখ বড় বড় করে একবার বাবার দিকে তাকাচ্ছে, একবার
আমার দিকে তাকাচ্ছে।
আমি কিছু বলার আগেই রিমি হুংকার দিয়ে
বাবাকে বলল,
.
-- কিসের বিয়ে, হ্যা.? কার বিয়ে.? (রিমি)
.
-- কেন, শাহিনের বিয়ে.! (বাবা)
.
বাবা অকপটে বলে দিল। যেন বিষয়টা
স্বাভাবিক, নিত্যনতুন ঘটনা।
এদিকে,
রিমি বাবার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দাঁত
কিড়মিড় করে বলল, ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
.
-- তোমার মাথা কি খারাপ হয়ে গেছে.? কি সব
আবোল-তাবোল বকছো। আর আম্মু তুমি কিছু বলছো
না কেন.?
আব্বু অফিস থেকে ফিরে এসব কি বলছে.! (রিমি)
.
-- হ্যা গো, তুমি হুট করে কার সাথে শাহিনের বিয়ে
ঠিক করে এলে.? (উত্তেজিত হয়ে)
.
-- আহা, তোমরা এত উত্তেজিত হচ্ছো কেন.?
শান্ত হও, সব বলছি। আগে এক গ্লাস পানি দাও
তো, খুব তৃষ্ণা পেয়েছে।
উফফফ.! যা ধকল গেল আজ। (বাবা)
.
মা বাবাকে পানি দিল। পানি খেয়ে বাবা শান্ত গলায়
মাকে বলল,
.
-- আমার অফিসের কলিগ রহমান সাহেবের কথা
তোমার মনে আছে.?
কিছুদিন আগে যে আমাদের বাড়িতে এসেছিল। (বাবা)
.
-- হ্যা, মনে আছে। কেন কি হয়েছে.? (মা)
.
-- উনার একটা মেয়ে আছে। নাম ইসরাত জাহান তরী.! তার সাথেই শাহিনের বিয়ে ঠিক করে এসেছি। (বাবা)
.
-- কি বলো, চেনা নাই, জানা নাই হুট করে একটা মেয়ের
সাথে বিয়ে ঠিক করে এলে.! (মা)
.
মা বেশ রেগেই কথাটা বলল। পাশে থেকে রিমিও
মার সাথে সুর মেলালো। চোখ পাকিয়ে বাবাকে বলল,
.
-- এসব বিয়ে-টিয়ে এখন হবে না। সব বাদ। (রিমি)
.
-- আরে, তোমরা এত রেগে যাচ্ছো কেন.?
পুরো কথাটা শোনো আগে... (বাবা)
.
-- আচ্ছা, বলো। (মা)
.
-- আসলে রহমান সাহেব বেশ কয়েকদিন ধরে উনার
মেয়ের বিয়ের জন্য ছেলে খুজছিলেন।
আমাকেও বিষয়টা বলেছিলেন যাতে একটা ভালো
ছেলের সন্ধান দিতে পারি। ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
আমিও উনাকে আমার কয়েকটা বন্ধুর ছেলের
কথা বলেছিলাম। কিন্তু আজ সকালে রহমান সাহেব অফিসে এসে বললেন, উনার মেয়ের নাকি শাহিনকে
পছন্দ হয়েছে। (বাবা)
.
-- শাহিনকে কিভাবে পছন্দ হলো, হ্যা.?
কিভাবে পছন্দ হলো.? ওই মেয়েটা কি শাহিনকে
চেনে.? (রিমি)
.
-- সেরকম ভাবে হয়তো চিনে না কিন্তু গত মাসে
শাহিন যখন তরীর জন্মদিনে গিয়েছিল তখন দেখেছে।
শাহিনকে নাকি তরীর ভালো লেগেছে, বিয়ে করতে
চায়.! (বাবা)
.
-- আর সেটা শুনেই তুমি বিয়ে ঠিক করে চলে এলে।
বলি, মাথার বুদ্ধি কি সব গরু চরাতে গেছে.?
(দাঁত কিড়মিড় করে)
.
-- তুই এত রেগে যাচ্ছিস কেন, মা.? (বাবা)
.
-- রাগবো না তো কি করবো.? তুমি হুট করে বিয়ে
ঠিক করবে কেন.? (রিমি)
.
রিমি উত্তেজিত হয়ে ঠাস করে টেবিলে চড় মেরে
কথাটা বলল। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না, আমার
বিয়ের কথা শুনে রিমি এত লাফাচ্ছে কেন.?
আমি কিছু বলার আগেই রিমি মাকে চেচিয়ে বলল,
.
-- আম্মু, তুমি চুপ করে আছো কেন.? আব্বু এসব
কি শুরু করেছে.? কিছু বলছো না কেন.? (রিমি)
.
-- কি বলবে হ্যা.? তুই এমন শুরু করেছিস যেন
শাহিন কোনদিন বিয়েই করবে না। (বাবা)
.
-- আমি তো সেটা বলি নি। (রিমি)
.
-- তাহলে সমস্যা কোথায়.? (বাবা)
.
-- সমস্যা হলো, শাহিন এখনো পড়ালেখা করছে।
আগে পড়ালেখা শেষ করুক, ভালো একটা চাকরি
পাক, তারপর না হয় বিয়ের কথা ভাবা যাবে। (রিমি)
.
-- হ্যা গো, রিমি তো ঠিকই বলেছে। শাহিন এখন
পড়ালেখা করছে, আগে পড়ালেখাটা শেষ করুক। (মা)
.
এবার দেখি, আমার আম্মাজানও রিমির সাথে তাল
মেলালো। এরা কি আমাকে বিয়ের পিড়িতে বসতে
দিবে না.? সত্যি বলতে, রিমির উপর প্রচন্ড রাগ উঠলো। মাথা গরম হয়ে গেছে আমার। এই পেন্তীটা আমার
বিয়ে নিয়ে এত নাচানাচি শুরু করছে কেন.?
যার বিয়ে তার খবর নাই, পাড়া-পড়শির ঘুম নেই।
বিয়েটা হবে আমার। এতে আমার মত আছে কি নেই
সেটা সম্পূ্র্ণ আমার উপর নির্ভর করে।
বুঝিনা এতে রিমির মাথা ব্যথা কিসের.? এমন ভাব
করছে যেন বিয়েটা রিমির হবে।
.
এদিকে,
মা আর রিমির কথা শুনে বাবা রেগে আগুন.!
ধমক দিয়ে মাকে বলল,
.
-- তোমার ছেলে তো পড়ালেখা করে আমাকে
উদ্ধার করেছে। অপদার্থ একটা.!
সারাদিন এদিকে সেদিক টো-টো করে ঘুরে বেড়ানো
আর আড্ডা দেওয়া ছাড়া কোন কাজটা করে শুনি.?
রিমি ওকে পরীক্ষায় হেল্প না করলে তো গোল্লা পেত।
আর তোমরা ওর পড়ালেখা নিয়ে চিন্তা করছো।
ও ফেল করলেই আমার কোন আক্ষেপ থাকবে না।
যাই হোক, আমি ওর বিয়ে দিতে চাইছি, যাতে ও নিজের
দায়িত্ববোধ সম্পর্কে বোঝে।
বড় তো আর কম হলো না। বিয়ে হলে নিজের দায়িত্ব
সম্পর্কে জানবে, পরিবারের হাল ধরবে। আর কতদিন ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
ওকে বসে বসে খাওয়াবো.?
এখন ওর নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে বোঝা উচিত।
বিয়ে হলে বরং ভালোই হবে। তাছাড়া আমি তো আর
আমার ছেলের খারাপ চাইবো না।
ওর ভালোর জন্যই আমার এই সিন্ধান্ত। (বাবা)
.
-- সেটা না হয় বুঝলাম কিন্তু সেদিন রহমান
সাহেবের মুখে শুনেছি, উনার মেয়ে নাকি এতদিন
বিদেশে ছিল.! (মা)
.
-- হ্যা, মাস দু'য়েক আগে দেশে ফিরেছে। (বাবা)
.
-- কি বলো.! শেষে একমাত্র ছেলের জন্য বিদেশি বউ আনবে.? না, এ বিয়েতে আমার মত নেই। (মা)
.
-- একদম ঠিক বলেছো, আম্মু। কোথাকার কোন
মেয়ে, তার উপর বিদেশে ছিল.!
না জানি ঐ দেশে কত আকাম-কুকাম করে
এসেছে.! (রিমি)
.
-- চুপ কর তুই.! খালি আজেবাজে কথা। (বাবা)
.
বাবার ধমকে রিমি মুখ কালো করে বসে রইলো।
বিরবির করে কি যেন একটা বলল।
আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। বাবা, মা'কে শান্ত
গলায় বলল,
.
-- দেখো সাদিয়া, তরী মেয়েটা খুব ভালো.!
ভারি মিষ্টি মেয়ে.! আজ সারাদিন আমি সেখানেই ছিলাম।
মেয়েটা একটু পরপর আমাকে এসে বাবা বাবা বলে ডাকছিল। বড্ড মিশুক মেয়ে.!
একদিনেই আমার মন জয় করে নিয়েছে।
তরীকে দেখে কেউ বুঝতেই পারবে না, সে এতদিন বিদেশের মাটিতে ছিল।
ওখানকার কোনো চালচলন-ই তরীর মাঝে নেই।
আসলে, তরীর খালার কোনো ছেলে-মেয়ে নেই।
তাই তরী এতদিন বিদেশে ওর খালার কাছে ছিল। (বাবা)
.
-- ওহ, বুঝলাম। (মা)
.
বাবার মুখ থেকে তরী নামের মেয়েটার এত প্রসংশা
শুনে আমার মনে লাড্ডু ফুটতে লাগলো।
আসলে বাবা সহজে কারও প্রসংশা করে না।
আমার তো একদম-ই না। আমি যদি নোবেল পাই
তবুও মনে হয় বাবা প্রসংশা করবে না।
উল্টো বলবে, "নোবেল পাওয়া কি আর এমন বড় ব্যাপার। এটা তো অনেকেই পেয়েছে।"
.
কিন্তু আজ আমার সেই বাবাই অন্যের প্রসংশা করছে.! ভাবা যায়.? নিশ্চয় মেয়েটার মর্ধ্যে বিশেষ কিছু আছে।
তা না হলে আমার বাবার মত মানুষের মন পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়।
আমার কেন জানি, না দেখেই মেয়েটাকে খুব ভালো লাগতে শুরু করেছে। আমি খুশিতে মুচকি মুচকি
হাসতে লাগলাম।
.
হটাৎ মা'র নজর আমার দিকে পড়লো।
আমি নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম। vডেঞ্জারাস মামাতো বোন
এমন ভাব করলাম যেন এতক্ষণ কিছুই শুনি নি।
মা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বাবাকে বলল,
.
-- ছেলের বিয়ে তো ঠিক করে এলে কিন্তু ছেলে রাজি
হবে কি-না সেটা ভেবেছো.?
শাহিনেরও তো একটা পছন্দের ব্যাপার আছে। (মা)
.
-- আরে বিয়ে ঠিক করে এসেছি মানে এই না যে
কালকেই বিয়ে দিবো।
আগে দু'জনে পরিচিত হোক, কথা বলুক, একসাথে
সময় কাটাক তারপর তারা নিজেরাই সিন্ধান্ত নিবে। তাছাড়া আমি এখনো বিয়ের পাকা কথা দিয়ে আসি নি। তোমাদেরও তো একটা মতামত আছে।
কয়েকদিন পর না হয় সবাই মিলে তরীদের বাড়িতে যাবো। তখন-ই না হয় বিয়ের ফাইনাল কথাবার্তা হবে। (বাবা)
.
-- হুমম, ঠিক বলেছো কিন্তু তোমার ছেলে তো কিছুই
বলছে না। তখন থেকে চুপ করে আছে। (মা)
.
-- শাহিন বিয়ে করবে না তাই চুপ করে আছে।
খামোখা ঝামেলা বাধিয়ো না। (রিমি)
.
-- আচ্ছা, বিয়েটা কি তোর হচ্ছে.? তুই এত ফটফট
করছিস কেন.? (বাবা)
.
-- আমি তো শুধু শাহিনের মনের কথা বললাম। (রিমি)
.
-- শাহিনের মনের কথা ও নিজে বলবে।
কিরে শাহিন, এই বিয়েতে তোর অমত আছে.?
তুই কি অন্য কোন মেয়েকে ভালবাসিস বা পছন্দ
করিস.? (বাবা)
.
-- না, বাবা। তোমরা যেটা বলবে সেটাই হবে। (আমি)
.
কথাটা বলেই আমি ঘরে চলে এলাম। খুব আনন্দ
লাগছে আজ। একটু লজ্জাও লাগছে।
ছোট বেলা থেকেই আমার বিয়ে নিয়ে অনেক স্বপ্ন।
আমি সুন্দরী একটা মেয়েকে বিয়ে করবো, তার সাথে
আমার ছোট্ট একটা সংসার হবে, আমাদের ছেলে
মেয়ে হবে, চাঁদনী রাতে দু'জন পাশা-পাশি বসে চন্দ্র
বিলাস করবো, বৃষ্টিতে দু'জন একসাথে ভিজবো.!
বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দে আমার বউ ভয়ে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে, রাতে আমার বুকে মাথা
রেখে ঘুমাবে, বকবক করে সারাক্ষণ আমার সাথে
গল্প করবে, অফিস থেকে দেরি করে ফিরলে গাল ফুলিয়ে
বসে থাকবে, অভিমান করবে, এত্ত এত্ত বায়না ধরবে।
আরো অনেক চিন্তা-ভাবনা করে রেখেছি আমার ভবিষ্যৎ বউকে নিয়ে.! যাক, অবশেষে আমার কল্পনাগুলো সত্যি
হতে চলেছে।
.
আমি শুয়ে থেকে তরীর কথা ভাবতে লাগলাম।
কে এই মেয়ে, যে আমাকে পছন্দ করে.!
আসলে তরীর নাম বাবার মুখে ২-৩ বার শুনলেও
কখনো দেখি নি। গতমাসে তরীর জন্মদিন ছিল।
বাবা আমাকে আর রিমিকে যেতে বলল।
কিন্তু রিমি যাই নি। ওর এসব জন্মদিন টন্মদিন ভালো
লাগে না। বাধ্য হয়ে আমি একাই গিয়েছিলাম।
.
জন্মদিনে তরীর সাথে আমার সামনা সামনি দেখা হয় নি।
দূর থেকে আবছা ভাবে এক নজর দেখেছিলাম। ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
সত্যি বলতে, জন্মদিনের পার্টিতে সুন্দরী মেয়েদের দেখার
জন্যই আমি সেখানে গিয়েছিলাম।
পুরো সময়টা মেয়েদের পিছনে ঘুরঘুর করেছিলাম।
কিন্তু আমার অজান্তেই কোন মেয়ে আমাকে পছন্দ
করবে সেটা স্বপ্নেও ভাবি নি।
.
আমি এসব ভেবে পাশে তাকাতেই চমকে উঠলাম।
দেখি, রিমি গোমড়া মুখে পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
পেন্তীটা কখন এসেছে টেরই পাই নি।
আমি নরম গলায় বললাম,
.
-- কিরে, কিছু বলবি.? (আমি)
.
-- তুই কি সত্যি-ই বিয়েটা করতে চাস.? (রিমি)
.
-- কেন.? কোন সমস্যা.? (আমি)
.
রিমি আমার পাশে এসে বসলো। শান্ত গলায় বলল,
.
-- দেখ শাহিন, তোর এখন পড়ালেখা করার সময়।
এখন বিয়ে করলে লাইফটা শেষ হয়ে যাবে। আগে সেটেল
হ, তারপর একটা ভালো মেয়ে দেখে বিয়ে করিস।
আর তাছাড়া তরী মেয়েটা ভালো না রে। এতদিন বিদেশে
ছিল। না জানি ওখানে কতগুলো ছেলের সাথে.... আমার
বলতেও লজ্জা করছে।
ওসব মেয়েদের চরিত্রের কোন ঠিক নেই। (রিমি)
.
রিমির কথা শুনে আমার প্রচন্ড রাগ উঠলো।
না জেনে-বুঝে একটা মেয়ের সম্পর্কে এমন খারাপ
মন্তব্য করছে কেন.?
আমি রিমিকে কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।এখন রিমির কথার বিপরীত কিছু বললেই ঝগড়া বাঁধাবে। আমি ছোট করে বললাম,
.
-- না জেনে কারও সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করা
ঠিক না, রিমি। (আমি)
.
-- আমি যা সত্যি তাই বলেছি। তরী মেয়েটা আসলেই
খারাপ। (রিমি)
.
-- বাজে কথা রাখ। এমনভাবে বলছিস যেন তুই আগে
থেকেই তরীকে চিনিস। না জেনে কথা বলবি না। (রেগে)
.
-- তুই এত রেগে যাচ্ছিস কেন.? আমি কি তোর
খারাপ চাই নাকি.?
তোর ভালোর জন্যই এসব বললাম। (রিমি)
.
-- আমার ভালো নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। (আমি)
.
-- অবশ্যই ভাবতে হবে। তুই বিয়েটা ক্যান্সেল
করে দে। (রিমি)
.
-- কেন.? (আমি)
.
-- আমার পছন্দ না। (মুখ গোমড়া করে)
.
রিমির কথা শুনে না হেসে পারলাম না।
আমি হাসতে হাসতে বললাম,
.
-- বিয়েটা কি তোর হচ্ছে.? তাছাড়া তোর পছন্দের
কেউ ধারধারে না। (আমি)
. ডেঞ্জারাস মামাতো বোন
-- একদম দাঁত ক্যালাবি না। আমি রেগে যাচ্ছি
কিন্তু.! (রিমি)
.
-- আরে পাগলি, বিয়েটা তো ছেলে খেলা না।
বাবা বিয়ে ঠিক করে এসেছে বলেই বিয়ে করতে
হবে এমনটা নয়।
আগে মেয়েটার সাথে দেখা করি, কথা বলি তারপর
সিন্ধান্ত নিবো। তোকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে না। (আমি)
.
-- আমি অতকিছু শুনতে চাই নি। বিয়ে ক্যান্সেল
করতে বলেছি, ক্যান্সেল করে দিবি ব্যস.!
আর মেয়েটার সাথেও দেখা করার দরকার নেই। (রিমি)
.
-- আচ্ছা, ক্যান্সেল করে দিবো। (আমি)
.
-- সত্যি.? (খুশি হয়ে)
.
-- হুমম। এখন যা, ঘুমাবো। (আমি)
.
রিমি আর কিছু বলল না। আমার গাল দু'টো আলতো
করে টেনে দিয়ে মুচকি হেসে চলে গেল।
আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। যদি এখন বিয়ে ক্যান্সেল
করার কথা না বলতাম তাহলে রিমি সারারাত কানের
কাছে ঘ্যানঘ্যান করতো। এক কথা চৌদ্দবার বলতো।
যাই হোক, পেন্তীটাকে বিদেয় করতে পেরেছি এতেই অনেক। এখন শান্তিমত ঘুমানো যাবে।
.
রাত প্রায় ১২ টা বাজে.! আমি বিছানায় শুয়ে
এপাশ-ওপাশ করছি। কিছুতেই চোখে ঘুম ধরা দিচ্ছে না।
হটাৎ ফোনটা বেঁজে উঠলো। আমি চমকে উঠলাম। মাঝরাতে আবার কে ফোন দিল.?
ফোন হাতে নিয়ে দেখি, আননোউন নাম্বার।
ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে মিষ্টি কন্ঠের
একটা মেয়ে সালাম দিলো.!
.
.
.
চলবে..... ?????
0 Comments